ব্লিংকেনের বক্তব্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে: শাহরিয়ার আলম
শ্রমিক নেতা ও অধিকার কর্মী কল্পনা আক্তার বাংলাদেশে হুমকি বোধ করছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন যে বক্তব্য দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তার ব্যাখ্যা জানতে চাইবে বাংলাদেশ।
আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) প্রাক-নির্বাচনী কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
তিনি বলেন, 'ব্লিংকেনের বক্তব্য বাংলাদেশকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া নয়। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের একজন গার্মেন্টকর্মী কল্পনা আক্তার। আরও দুটি দেশের কথা বলেছেন। কিন্তু, বাংলাদেশের কোনো ইস্যু তিনি উল্লেখ করেননি। গার্মেন্ট কিংবা টেক্সটাইলের কিছু ছিল না তাতে। এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে শ্রম অধিকার শক্তিশালী করার বিষয়।'
বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের অধিকার ও তাদের মানোন্নয়ন নিয়ে নতুন একটি স্মারকপত্রে সই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্মারকপত্র প্রকাশের পর এ নিয়ে কথা বলেছেন ব্লিংকেন। তার বক্তব্যে বাংলাদেশের শ্রমিক নেতা কল্পনা আক্তারের বিষয়টি উঠে আসে।
গত ১৬ নভেম্বর এই স্মারকপত্র ঘোষণাকালে ব্লিংকেন বলেন, 'আমরা বাংলাদেশী গার্মেন্ট কর্মী কল্পনা আক্তারের মতো মানুষদের সঙ্গে থাকতে চাই। তিনি বলেছেন, তিনি এখনো বেঁচে আছেন কারণ মার্কিন দূতাবাস তার পক্ষে কাজ করেছে।'
এবিষয়ে আজ শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা এটা পরবর্তী আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে জিজ্ঞেস করব। যদি আমার স্মৃতি ভুল না করে থাকে, তাহলে কল্পনা আক্তার বাংলাদেশে একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন, ২০১০ সালে। তবে তিনি একা না, একাধিক শ্রমিক নেতা চাকরিরত অবস্থায় আন্দোলন করায় গ্রেফতার হয়েছিলেন।'
তিনি আরও বলেন, 'পরবর্তীসময়ে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, তৈরি পোশাক খাতে যে অরাজকতা হয়, সেটা খুবই টেম্পরারি নেচারের (অস্থায়ী প্রকৃতির)। হঠাৎ করেই এটা শেষ হয়ে যায়, আবার বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু রানা প্লাজা ধসের পর পশ্চিমা দেশগুলোর কিছু ক্রেতা যখন কারখানাগুলো অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে, তখন কল্পনা আক্তারসহ আরও দু-একজন মিলে প্রতিবাদ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই গ্রেফতার হয়েছিলেন।'
শাহরিয়ার বলেন, কাজেই কল্পনা আক্তার যেটা বলেছেন যে তিনি আমাদের বা অন্য কারও কাছ থেকে হুমকির শিকার হয়েছেন, এর ব্যাখ্যা আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চাইবো। কল্পনা আক্তার খুবই সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রেকর্ড কিংবা আপনারা যদি তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, তিনি এ কথা বলেছেন কি-না, বলে থাকলে কীসের ভিত্তিতে বলেছেন, তাকে এটা জিজ্ঞেস করার দায়িত্ব সাংবাদিকদের।