১৭ দিন পর ভারতের উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গ থেকে শ্রমিকদের উদ্ধার
দীর্ঘ ১৭ দিন পর ভারতের উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করে আনা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সময় আজ (মঙ্গলবার) রাত আটটা ২৭ মিনিটের দিকে প্রথম শ্রমিককে বের করে আনা হয়। ধীরে ধীরে মোট ৪০ জন শ্রমিকদের সকলকেই বের করে আনছেন উদ্ধারকারীরা।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, সুড়ঙ্গের মধ্যেই প্রাথমিকভাবে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে। তারপর অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে চিকিৎসার জন্য ৪১ শয্যার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশীতে নির্মিত সুড়ঙ্গে ধস নামে। সেখানে ৪১ জন শ্রমিক আটকে পড়েন। তারপর থেকেই তাদের উদ্ধারে শুরু করা হয় অভিযান।
কিন্তু হিমালয়ের ভেতর থেকে শ্রমিকদের বের করে আনার কাজটা একেবারেই সহজ ছিল না। এমনকি বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ ও যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা হয়। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চলতে থাকে উদ্ধারকাজ। একইসাথে তাদের খাবার পাঠানো হতে থাকে। কিন্তু যত সময় যাচ্ছিল, ততই বাড়ছিল উদ্বেগ।
তারইমধ্যে গত ২১ নভেম্বর ভোরে আটকে পড়া শ্রমিক, তাদের পরিবার এবং উদ্ধারকারীদের মুখে কিছুটা হাসি ফোটে। এন্ডোস্কোপিক ফ্লেক্সি ক্যামেরা দিয়ে প্রথমবার শ্রমিকদের দেখা যায়। তখন মনে করা হয়েছিল যে, এবার খুব শীঘ্রই শ্রমিকদের উদ্ধার করা হবে। উদ্ধারকারীরাও বলছিলেন যে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধারকাজ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু কিছু না কিছু বাধা আসছিল। সুড়ঙ্গের মধ্যেই ভেঙে যায় অগার মেশিনের একাংশ। থমকে যায় উদ্ধারকাজ।
আর তারপর বিশেষজ্ঞরা হাতে যে শেষ উপায় পড়েছিল, সেই পথেই হাঁটেন। গত সোমবার থেকে হাত দিয়েই ধ্বংসস্তূপ খুঁড়তে থাকেন উদ্ধারকারীরা। সেজন্য দিল্লি থেকে উড়িয়ে আনা হয় 'র্যাট হোল মাইনিং'-র একটি দলকে। যে প্রক্রিয়া কিছুটা বিপজ্জনক হলেও মেঘালয়ের মতো কয়েকটি জায়গায় সেই পদ্ধতিতেই কয়লা সংগ্রহ করা হয়।
বিকল্প হিসেবে চলতে থাকে ভার্টিকাল খননও (ভারতীয় সেনা সেই কাজ করতে থাকে)। অবশেষে আজ মঙ্গলবার দুপুর দুটো নাগাদ সুড়ঙ্গ খননের কাজ শেষ করা হয়। তারপর শ্রমিকদের বের করে আনার কাজ শুরু করা হয়।
সোমবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ কাজ শুরু করেন 'র্যাট হোল মাইনার'-রা। ২৪ ঘণ্টার কম সময়েই তারা ১২ মিটার ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলেন। তারপর সেই পাইপ দিয়ে শ্রমিকদের করে নিয়ে আসা হতে থাকে।