সহজ জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ
পরপর দুই ছয়ে শ্রীলঙ্কার দেওয়া মাঝারি লক্ষ্য পেরিয়ে গেলেন তাওহিদ হৃদয় ও নাজমুল হাসান শান্ত। আট উইকেটের সহজ জয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ। ৯ মার্চ তৃতীয় টি-টোয়েন্টি হয়ে উঠল সিরিজ নির্ধারণী।
লিটন-সৌম্যের এনে দেওয়া অসাধারণ শুরুকে দারুণভাবে শেষ করলেন অধিনায়ক শান্ত এবং হৃদয়। শান্ত অপরাজিত থাকেন হাফসেঞ্চুরি করে। লিটন, হৃদয়রাও অবদান রেখেছেন জয়ে। তবে এমন দারুণ এক জয়েও থেকে গেছে ছোট্ট একটা প্রশ্নচিহ্ন। সৌম্য সরকারকে কট বিহাইন্ড আউট দেওয়া না দেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্কের।
লঙ্কানদের দেওয়া ১৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেন দুই বাংলাদেশ ওপেনার লিটন ও সৌম্য। নিজেদের সাবলীল শট খেলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন দারুণভাবেই। এরপরই ঘটে একটি বিতর্কিত ঘটনা, বাংলাদেশের ইনিংসের চতুর্থ ওভারে শ্রীলঙ্কান পেসার বিনুরা ফার্নান্দোর বল পুল করতে গিয়ে সৌম্য সরকার ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। মাঠের আম্পায়ার গাজী সোহেল শ্রীলঙ্কানদের আবেদনে সাড়া দিয়ে আঙুল তুলে দিয়েছিলেন।
তখন সৌম্য অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যান লিটনের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নেন। বড় পর্দায় আল্ট্রা–এজে স্পাইক দেখা যায়। যা দেখে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটতেও শুরু করেছিলেন সৌম্য। কিন্তু আল্ট্রা-এজে স্পাইক দেখানো সত্ত্বেও টেলিভিশন আম্পায়ার মাসুদুর রহমান সিদ্ধান্ত দিলেন বল ব্যাটে লাগেনি! তাতে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তও বদলে যায়। যা নিয়ে মাঠে বেশ কিছুক্ষণ তর্ক করতে দেখা যায় লঙ্কান ক্রিকেটারকদেরকে।
তবে সুযোগ পেয়েও সৌম্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২২ বলে ২৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিতে থাকেন অধিনায়ক শান্ত ও লিটন। বিপিএলের পর প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও পারফর্ম করতে না পারায় চাপে ছিলেন শান্ত। সেটি উড়িয়ে দিয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
লিটন ২৪ বলে ৩৬ রান করে ফিরে গেলেও তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন শান্ত। ৩৮ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, মেরেছেন চারটি চার ও দুটি ছয়। ২৫ বলে দুই চার ও এক ছয়ে ৩২ রান করে অপরাজিত ছিলেন হৃদয়।
এর আগে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিং করে সফরকারীদের ১৬৫ রানে থামিয়েছে বাংলাদেশ। সিলেটে আজ প্রথম টি-টোয়েন্টির মতো সহজে রান তুলতে পারেনি লঙ্কানরা। প্রথম ম্যাচে ডেথ ওভারে বাজে বোলিংয়ের মাশুল গুনতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শেষদিকে শ্রীলঙ্কার রানের গতি বাড়তে দেননি শরিফুল-তাসকিনরা।
অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে খেলতে নেমে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। প্রথম ম্যাচের মতোই আজও তেমন কিছু না করেই ফিরে যান লঙ্কান ওপেনার আভিষ্কা ফার্নান্দো। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৬ রান যোগ করেন দুই মেন্ডিস- কামিন্দু ও কুশল। ২২ বলে ৩৬ করা কুশল যখন আগের ম্যাচের মতো ভয়ংকর হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তখন তাকে লিটনের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান সৌম্য সরকার।
কামিন্দু মেন্ডিস রানআউট হন ২৭ বলে ৩৭ রান করে। এরপর অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কাও ঝড় তোলার চেষ্টা করেন। এক চার ও তিন ছয়ে ১৪ বলে ২৮ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। শেষদিকে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ২১ বলে চার চারে ৩২ রান করে শ্রীলঙ্কার রান ১৬০ পার করেন। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন, মুস্তাফিজ, সৌম্য ও মেহেদি। কোনো উইকেট না পেলেও চার ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়েছেন শরিফুল ইসলাম, যার মধ্যে ইনিংসের প্রথম ওভারে কোনো রান দেননি তিনি।