ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর করবে যুক্তরাষ্ট্র
![](https://tbsnews.net/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/03/08/1.png)
সমুদ্রপথে আরও মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে গাজায় একটি অস্থায়ী বন্দর নির্মাণ করবে মার্কিন সামরিক বাহিনী। দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতকাল (বৃহস্পতিবার) এই ঘোষণা দেন। খবর বিবিসির।
মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, অস্থায়ী বন্দরটি ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তার পরিমাণ প্রতিদিন 'শতশত অতিরিক্ত ট্রাক বোঝাই' আকারে বাড়িয়ে দেবে।
একইসাথে বাইডেন আশ্বস্ত করেছেন যে, এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে গাজার মাটিতে মার্কিন সেনারা অন্তর্ভুক্ত হবেন না।
অন্যদিকে গাজায় চলমান যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে, উপত্যকাটির জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। ঠিক এমন অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্দর নির্মাণের ঘোষণা এলো।
বাইডেন বলেন, "মার্কিন সামরিক বাহিনী যে বন্দরটি নির্মাণ করবে সেটি থেকে উপকূলে পণ্য পরিবহনের জন্য একটি অস্থায়ী পিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হবে।"
তবে কে বা কারা রাস্তা নির্মাণ করবে কিংবা ভূমিতে সহায়তা নিশ্চিত করবে তা স্পষ্ট নয়। অর্থাৎ উদ্যোগটি শেষ পর্যন্ত সফল হবে কি-না সে সম্পর্কে বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, বন্দরটি স্থাপন করতে 'কয়েক সপ্তাহ' সময় লাগবে। এরমধ্যেই বন্দরটি খাদ্য, পানি, ওষুধ ইত্যাদি বহনকারী বড় জাহাজগুলি গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। প্রাথমিক চালানটি সাইপ্রাস হয়ে গাজায় পৌঁছাবে, যেখানে ইসরায়েলের নিরাপত্তা দল তা খতিয়ে দেখবে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, "একটি অস্থায়ী বন্দর প্রতিদিন গাজায় মানবিক সহায়তার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে। মানবিক সহায়তা গৌণ বিবেচনা কিংবা দর কষাকষির বিষয় হতে পারে না।"
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় যুদ্ধ। এতে সেখানে প্রাথমিকভাবে ১২০০ জন নিহত হয়। একইসাথে ২৫৩ জনকে বন্দি করে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
জবাবে পালটা হামলা শুরু করে তেল আবিব। গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩০,৮০০ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এদিকে চলমান সংঘাত গাজায় ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট তৈরি করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সম্প্রতি সতর্ক করেছে যে, গাজার উত্তরাঞ্চলে শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে। সেখানে আনুমানিক ৩ লাখ ফিলিস্তিনি অল্প খাবার বা বিশুদ্ধ পানির সংকট নিয়ে বসবাস করছে।
গাজার কোনো গভীর সমুদ্র বন্দর নেই। এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কয়েক সপ্তাহ ধরে জরুরিভাবে সাহায্যের শিপলোড করায় উপায় খুঁজছে।
এদিকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি গাজার উত্তরাঞ্চলে খাদ্য সরবরাহ স্থগিত করছে। কেননা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রীবাহী কনভয়গুলি লুটপাট ও সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছে।"
এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশগুলি বিমানের মাধ্যমে সাহায্য প্রদানের চেষ্টা করছে। তবে মানবিক সংস্থাগুলির দাবি, ক্রমবর্ধমান চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান