ড. ইউনূসসহ চারজনের সাজার রায় স্থগিতের আদেশ বাতিল করলেন হাইকোর্ট
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার শীর্ষ কর্মকর্তার কনভিকশন (দোষী সাব্যস্তকরণ) ও সাজা রায় স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ (১৮ মার্চ) এ রায় দেন।
রায়ে আদালত বলেছেন, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চারজনের বিরুদ্ধে দেওয়া কনভিকশন কার্যকর থাকবে। ড. ইউনূসসহ চারজন কর্মকর্তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তাই সাজা স্থগিত আছে। যতক্ষণ তাঁরা জামিনে আছেন, সাজা এবং শ্রম আদালতের দেওয়া জরিমানা স্থগিত থাকবে। রায়ে বাস্তবায়নযোগ্য নির্দেশনা আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
আদালত আরো জানিয়েছেন, আপিল ট্রাইব্যুনাল দ্রুত আপিল নিষ্পত্তি করবেন। দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য ড. ইউনূসসহ চারজন কর্মকর্তাকে সংশ্লিষ্ট আদালতকে জানাতে হবে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত গত ১ জানুয়ারি ৬ মাসের সাজা দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার আসামিকে। তাদেরকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড এবং ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূস, গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলাটি করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
গত বছরের ৬ জুন এ মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে গত ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন ড. ইউনূসসহ চারজন। তৃতীয় শ্রম আদালতের দেওয়া রায় ৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে চারজনকে জামিন দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।
এ অবস্থায় তৃতীয় শ্রম আদালতের রায় ও আদেশ স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের বৈধতা নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন করে মামলার বাদী কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
বাদীপক্ষের এই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। রুলে তৃতীয় শ্রম আদালতের ১ জানুয়ারি দেওয়া রায় ও আদেশের কার্যক্রম স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ২৮ জানুয়ারি দেওয়া আদেশ কেন বাতিল হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
রুলের ওপর ৬ মার্চ শুনানি শুরু করে ১৪ মার্চ শুনানি শেষ হয়। ১৮ মার্চ রায়ের তারিখ ধার্য করেন আদালত।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ড. ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। সহযোগী হিসেবে ছিলেন আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ।