হাঁস খেয়ে ফেলায় খাঁচা বানিয়ে বন্দি করা মেছোবাঘ উদ্ধার হলো পরিবেশকর্মীর ফেসবুক পোস্টে
সিলেটের সদর উপজেলার মোগলগাও ইউনিয়নের লামারগাও গ্রামের সাইফুল আমিনের একটি হাঁসের খামার রয়েছে। প্রতিরাতে এই খামারের হাঁস খেয়ে যেত মেছোবাঘ। তাই লোহার খাঁচা বানিয়ে একটি মেছোবাঘ আটক করেন তিনি।
এই আটকের দৃশ্য একজন ফেসবুকে লাইভ করলে তা চোখে পড়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিমের। তিনি বাঘটি উদ্ধারের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ট্যাগ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। তার পোস্ট নজরে আসার পর মঙ্গলবার দুপুরে মেছোবাঘটি উদ্ধার করে সিলেটের টিলাগড় ইকোপার্কে অবমুক্ত করে সদর উপজেলা প্রশাসন।
খামার মালিক সাইফুল আমিন বলেন, 'গত কয়েকদিনে আমার খামারের প্রায় ৫০০ হাঁস খেয়ে ফেলেছে মেছোবাঘেরা। প্রতি রাতেই আমার ও আশপাশের আরও কয়েকজনের খামারের হাঁস খেয়ে যায়। তাই অতিষ্ঠ হয়ে মেছোবাঘ ধরতে আমি দুটি লোহার পিঞ্জিরা (খাঁচা) তৈরি করি। রোববার রাতে পিঞ্জিরাগুলো খামারের ভেতরে রেখে দেই। এরমধ্যে একটিতে মেছোবাঘ আটকা পড়ে।'
মেছোবাঘ আটকের দৃশ্য ধারণ করে সোমবার 'সিলেটের ম্যাগাজিন' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ করেন একজন। সেখানে আটকের রগরগে ধারাবর্ণনা দেওয়া হয়।
এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, 'সিলেট অঞ্চলে প্রায়ই এরকম মেছোবাঘ আটক করা হয়। আমরা বন্যপ্রাণী আটক করলেও বনবিভাগের হাতে তুলে দিতে মানুষজনকে সচেতন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে ফেসবুকে এমন রগরগে ধারাবর্ণনা দিয়ে লাইভ করলে মানুষ বন্যপ্রাণী আটক ও নির্যাতনে আরও উৎসাহী হবে। ফলে এমন কাণ্ড যিনি করেছেন– তাঁরও শাস্তি হওয়া উচিত।'
তিনি বলেন, ফেসবুকে এই আপত্তিকর লাইভটি দেখার পরপরই আমি তা শেয়ার করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং বনবিভাগের কর্মকর্তাদের নজরে আনি। এরপর আমার পোষ্টে এসেই সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, প্রাণীটিকে উদ্ধার করে অবমুক্ত করা হয়েছে।
মেছোবাঘটি উদ্ধার করে টিলাগড় ইকোপার্কে অবমুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছরীন আক্তার বলেন, বন্যপ্রাণী আটক ও নির্যাতনের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।