রমজানের আগে দাম বাড়ানো উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ব্যবসায়ীদের
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, কর্তৃপক্ষ শুধু খুচরা বিক্রেতা ও পাইকারি বিক্রেতাদের জরিমানা না করে রমজানের আগে দাম বাড়ায় এমন উৎপাদনকারীদের আইনের আওতায় আনুক।
প্রতি বছর রমজানের আগে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালায় এবং প্রায়ই দাম বৃদ্ধির জন্য জরিমানা করে। কিন্তু কারওয়ান বাজার ব্যবসায়ী সমিতি যুক্তি দিয়েছে, এ ব্যবস্থাগুলো অকার্যকর কারণ তারা মূল বিষয়টি মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে যেহেতু দাম উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) কারওয়ানবাজার কিচেন মার্কেটে ইসলামিয়া শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে এফবিসিসিআইয়ের মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীরা এ দাবি করেন।
এ সময় একজন ব্যবসায়ী মো. ওমর ফারুক বলেন, "রোজার আগে প্রতি বছরই আমাদের উপর শুরু হয় মনিটরিং, জরিমানা। কিন্তু রোজার এক সপ্তাহ আগে যে তেল-চিনির সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয় সেটার কি সরকার কোন খোঁজ রাখে? কই তাদেরকে তো জরিমানা করা হয় না।"
ব্যবসায়ীরা বলেন, "মিডিয়া সঙ্গে নিয়ে এসে তিনজন দোকানিকে জরিমানা করা হলো। হইহই পড়ে গেল।" আরেক ব্যবসায়ী বলেছেন, "কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির জন্য আমরা সত্যিই দায়ী কিনা তা তারা কখনই তদন্ত করে না।"
ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, "আমরা অযৌক্তিকভাবে কাউকে জরিমানা করি না। ব্যবসায়ী একটা পণ্য কিনছে, আবার বিক্রি করছে। এতে তার কোন ডকুমেন্ট নেই। এটা তো নিয়ম হতে পারে না। এখানে আমরা চাই ব্যবসায়ীরা নিয়মের মধ্যে আসুক, তাহলে তো আর জরিমানার দরকার হয় না।"
তিনি বলেন, কারওয়ানবাজারে রাতের বেলা এক পাশ দিয়ে ২০ টাকা দরে বেগুন প্রবেশ করে শুধু হাতবদল হয়ে অন্য পাশ দিয়ে ৮০ টাকা হয়ে বেরিয়ে যায়। এটা কতটা যৌক্তিক ব্যবসায়ীদের কাছেই প্রশ্ন।
এদিকে অনিয়ম এবং কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে বাজারকে অস্থিতিশীল করা অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করতে বাজার কমিটিগুলোর সহযোগিতা চেয়েছে এফবিসিসিআই। ঢাকার সমস্ত বাজার কমিটির মাধ্যমে এ ধরনের একটি তালিকা এবং কিছু সুপারিশ তৈরি করে সেটা সরকারের উচ্চপর্যায়ে দিতে চায় এফবিসিসিআই।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো আমিন হেলালী বলেন, "কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে গোটা ব্যবসায়ী গোষ্ঠী প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এই গ্লানি থেকে পরিত্রাণের জন্য সারা দেশের ব্যবসায়ীদের অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।"
সভায় কাওরানবাজার থেকে দোকান স্থানান্তরের বিষয়টিও উঠে এসেছে। ইসলামিয়া শান্তি সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন সরকার ব্যবসায়ীদের কারওয়ানবাজার থেকে সরিয়ে আমিনবাজার নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।
তিনি যুক্তি দিয়েছেন, প্রস্তাবিত স্থানে কারওয়ান বাজারে বর্তমানে যে বিপুল সংখ্যক ব্যবসা রয়েছে সেগুলোর জন্য উপযুক্ত অবকাঠামোর অভাব রয়েছে।