ছুটির দিনে রাজধানীতে জমজমাট ঈদের কেনাকাটা
ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে রাজধানীর বাজারগুলো।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) নিউমার্কেট, গাউসিয়া, বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, মৌচাক মার্কেটের বিপনীবিতানগুলো ক্রেতাদের উপস্থিতিতে ছিল সরগরম।
আর এবার ঈদের আমেজের মধ্যেই আসছে পহেলা বৈশাখ। চাঁদ দেখা যাওয়া সাপেক্ষে ঈদের দুদিন বাদেই বাংলা নববর্ষ আসছে। যে কারণে এবার ঈদ ও বৈশাখের কেনাকাটা একসঙ্গে কিনছেন অনেকেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় ফ্যাশন মার্কেটগুলোর প্রায় ৭৫ শতাংশ বেচাবিক্রি হয় এই দুই উৎসবে, যার আর্থিক পরিমাণ ৩০,০০০ কোটি টাকার বেশি।
কে ক্রাফ্টের উদ্যোক্তা ও বাংলাদেশের ফ্যাশন উদ্যোক্তা সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি খালিদ মাহমুদ খান টিবিএসকে বলেন, "আমাদের বিক্রি মোটামুটি ভালো। ছুটির দিন ক্রেতাদের ভিড় থাকে বেশি। তবে ছুটির দিন বাদে ভিড় কম থাকে। ছুটির দিন বাদে ভিড় কম থাকায় আমরা ধারণা করছি, শেষ ১০ দিনে বেশি কেনাকাটা হবে।
তিনি বলেন, "ঈদের পর পরই বৈশাখ। তাই কিছু মানুষ যারা বৈশাখেও কেনাকাটা করে, তারা এবার একসঙ্গেই দুই উৎসবের কেনাকাটা করে নিচ্ছেন।"
পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে গাউছিয়া মার্কেটে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সফিকুর রহমান। তিনি বলেন, "বাবার জন্য পাঞ্জাবি ও বোনের জন্য থ্রিপিস কিনেছি। পরিবারে সদস্যদের জন্য আরও কিছু কিনবো।"
গাউসিয়া মার্কেটের নাদিম শাড়ির বিক্রয় কর্মী মোহম্মদ আলম জানান, "আমাদের গত বছররের এই সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশ বিক্রি কম। আজ ছুটির দিনে অন্য দিনের স্বাভাবিক সময়ের মতো ক্রেতা ক্রেতা আসে। আগে এই ঈদের সময় এমন থাকতো যে, আপনার সঙ্গে কথা বলার সময় পেতাম না।"
নিউ মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের ভিড়ে ব্যবসায়ীদের যেন দম ফেলার ফুসরত নেই।
নিউ মার্কেট থেকে মেয়ের জন্য থ্রিপিস কিনেছেন হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, "গত বছরের তুলনায় দাম কমপক্ষে ১৫ শতাংশ বেশি মনে হয়েছে পোশাকের। তবে কষ্ট করে হলেও ঈদের সময় পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন পোশাক কিনতে হবে।"
দেশীয় তাঁত ও কারুশিল্পীদের কাজ নিয়ে দেশের দশটি নামকরা প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সম্মিলিত একটি উদ্যোগ দেশী দশ। নিপুণ, কে ক্র্যাফট, অঞ্জন'স, রঙ বাংলাদেশ, বাংলার মেলা, সাদাকালো, বিবিয়ানা, দেশাল, নগরদোলা ও সৃষ্টি— এই দশ প্রতিষ্ঠান রয়েছে দেশী দশে।
বসুন্ধরা শপিং মলে দেশী দশে দেখা যায়, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
অঞ্জনসের স্বত্বাধিকারী শাহীন আহমেদ বলেন, "প্রথম ১৫ দিন হিসেবে বলবো, যে লক্ষ্যমাত্রা হিসেব করেছি– তার চেয়ে কম বিক্রি হয়েছে। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, গত বছরের এই সময়ের চেয়ে বিক্রি কিছুটা কম। তবে চলতি সম্পাহে চাকরিজীবীরা বেতন, বোনাস পাবেন। আমার ধারণা বিক্রি তখন আরও বাড়বে।"
মগবাজারের দ্য গ্র্যান্ড প্লাজা শপিং মলে কথা হয় ভারতীয় পণ্যের এক প্রতিষ্ঠানের মালিক সানোনি আরা সায়েদের সঙ্গে। তিনি জানান, "সরাসরি ক্রেতার চেয়ে আমরাদের অনলাইনে বেশি বিক্রি হয়। আমাদের প্রতিটি পেশাই ভারতের।"
বিকালে দেখা যায়, মগবাজার আড়ংয়ের শোরুম ক্রেতায় পরিপূর্ণ। প্রতিটি কাউন্টারে দাম পরিশোধের লাইন ছিল ক্রেতাদের।