নয়-ছয়ের দিনে জাকির বললেন, ‘আমরা পুরোপুরি ব্যর্থ’
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটকে স্পোর্টিং বলা হয়। অবশ্য ব্যাটসম্যানদের জন্যই বেশি সুবিধা থাকে, তাই বেশিরভাগ সময়েই এই উইকেটে রান হয়। সর্বশেষ উদাহরণ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস। প্রায় দুইদিন ধরে ব্যাটিং করে অলআউট হওোর আগে স্কোরকার্ডে ৫৩১ রান জমা করে সফরকারীরা।
রানে রানে ড্রয়ের পথে হাঁটবে এই টেস্ট, তেমনই আভাস মিলেছিল। দ্বিতীয় দিন শেষ বিকেলে বাংলাদেশের ভালো শুরুও সেই ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কিন্তু তৃতীয় দিনে সব মিলিয়ে যা হলো, উইকেটকেও নেপথ্য কারণ হিসেবে বলতে পারেন কেউ কেউ। বাংলাদেশ হতাশার ব্যাটিং করেছে, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে শ্রীলঙ্কার উইকেট বৃষ্টি উদ্বেগ জাগাচ্ছিল, তবে কি বদলে গেল উইকেট!
আগের দিন এক উইকেট হারানো বাংলাদেশ এদিন বাকি ৯ উইকেট হারায় অল্প সময়ের ব্যবধানেই, ইনিংস থেমে যায় ১৭৮ রানে। প্রথম ইনিংসেই ৩৫৩ রানে এগিয়ে যাওয়া লঙ্কানরা আবার ব্যাটিংয়ে নেমে যেন সব ভুলে বসে, ৮৯ রানেই ৬ উইকেটে হারানো সফরকারীরা শেষ পর্যন্ত ১০২ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে। সব মিলিয়ে এদিন উইকেট গেছে ১৫টি, বাংলাদেশের ৯টি ও শ্রীলঙ্কার ৬টি।
অবশ্য ৬ উইকেট হারিয়ে ফেললেও ইতোমধ্যে ৪৫৫ রানের লিড নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় দিন শেষেই বড় হারের চিন্তা বাংলাদেশ শিবিরে। এদিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এলেন বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৪ রানের ইনিংস খেলা জাকির হাসান। স্বভাবতই প্রথম প্রশ্নটি থাকলো ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে। ব্যাখ্যায় বাঁহাতি ওপেনার কোনো রাখঢাক রাখলেন না। বললেন, পুরো দলই ব্যর্থ হয়েছে।
দল হিসেবে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়েছে, এটা বলাই বাহুল্য। কারণ হিসেবে জাকির জানালেন, সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যাটিং করতে না পারার কারণেই তাদের স্কোরকার্ডের এমন রুগ্ন চেহারা, 'কারণটা আর কী বলব, আমরা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছি। আমরা কেউ সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি। আমাদের যে ভূমিকা ছিল, সেটা আমরা পালন করতে পারিনি। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে আমাদের যে রকম খেলার কথা ছিল, আমরা ওই রকম খেলতে পারিনি।'
এমন ব্যর্থতার পরে বাংলাদেশের পরিকল্পনা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ব্যাটিংয়ে নামার সময় কী ভাবনা থাকে? জাকির বললেন, এটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে, 'এটা অবস্থা অনুযায়ী। যদি বলা হয় যে, স্পিন নয় পেস খেলবে, শেষের দিকে নাইট ওয়াচম্যান নামলে বা বোলার ব্যাটিং করলে বোলারকে সেইফ করে ব্যাটিং করা। আসলে ওটা পরের কাজ। কিন্তু আমরা তো আমাদের কাজটা করতে পারিনি। প্রথম পরিকল্পনা যদি কাজে লাগাতে পারি, তখন পরের পরিকল্পনা করা উচিত।'
চট্টগ্রামের এমন উইকেটে রান করতে না পারার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বল কোচের কোর্টে ঠেলে দেন জাকির। তবে মানসিকতার কারণে নিজেকেই তুললেন কাঠগড়ায়। ২৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের ভাষায়, 'সবার বিষয়ে আমি বলতে পারব না। কোচ বা যারা আছেন, তারা বলতে পারবেন। আমার ক্ষেত্রে যেটা মনে হয়, শট নির্বাচনে একটু সতর্ক হলে ভালো হয় আমার জন্য। কিন্তু এটা কোনো এক্সকিউজ হতে পারে না। একটা টেস্ট ম্যাচ খেলতে এলে, প্রস্তুত হয়ে আসতে হবে আমাকে। এই মানসকিতা আমার দিক থেকে তৈরি হওয়া উচিত।'