রূপসা রেলসেতুতে ধাক্কা লেগে সারবোঝাই জাহাজডুবি, নিখোঁজ ২
খুলনার রূপসা নদীর ওপর নির্মিত রূপসা রেলসেতুতে ধাক্কা লেগে একটি সার বোঝাই লাইটার জাহাজ ডুবে গেছে। এ ঘটনায় জাহাজে থাকা ১৩ জনের মধ্যে দুইজন নিখোঁজ হয়েছেন। রবিবার দুপুর ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন বাবুর্চি কালাম ও গ্রিজার শাকায়েত। অন্যরা সাঁতরে নদীর তীরে পৌঁছাতে পেরেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলনার রূপসা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) মো. নুরুল ইসলাম শেখ বলেন, 'জাহাজটি সুন্দরবনের হাড়বাড়িয়ায় অবস্থানরত বিদেশি জাহাজ থেকে সার নিয়ে যশোরের নোয়াপাড়া নদী বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। পথে দুর্ঘটনায় এটি ডুবে যায়।'
কার্গো জাহাজের মাস্টার মো. শহীদুল্লাহ জানান, এমভি টিএলএন-১ নামের লাইটার জাহাজটিতে এক হাজার ১৪০ টন টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট) সার ছিল।
এদিকে বন বিভাগ থেকে জানা গেছে, রূপসা-পশুর অভিন্ন নদীর পানখালী এলাকাতে ৪০৪ হেক্টর এলাকা জুড়ে ডলফিনের অভয়ারণ্য রয়েছে। লাইটার জাহাজটি যেখানে ডুবে গেছে, সেখান থেকে ওই অভয়ারণ্যের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। সেখানে বিরল প্রজাতির গাঙ্গেয় ডলফিন ও ইরাবতি ডলফিনের বাস। ২০২০ সালের ৪ মার্চ বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এই এলাকা অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করে। এই রাসায়নিক সার জলীয় পরিবেশে মিশে যাওয়ায় ডলফিনের ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, 'রাসায়নিক সারসহ জাহাজ ডুবে যাওয়ার ফলে জলজ জীববৈচিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক প্রাণি মারা যায় বা তাদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়। জলজ খাদ্য শৃংখলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।'
তিনি বলেন, 'আগে শ্যালা নদী দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল করত। ওই নদীটাও ডলফিনের অভয়ারণ্য। তবে একবার তেলবাহী জাহাজ ডুবে যাওয়ার ফলে বনের জীব বৈচিত্র মারাত্মক হুমকিতে পড়েছিল।'
মিহির কুমার দো আরও বলেন, 'জাহাজগুলো চলাচলে সুন্দরবন ও পার্শবর্তী অভয়ারণ্য এলাকায় কি পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, তা নিয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম চলছে। এটি শেষ হলে পরিবেশ রক্ষায় কি কি করণীয়, সেই বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে।'