যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই রাফাহ আক্রমণের 'তারিখ স্থির' করলো ইসরায়েল
কায়রোতে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মাঝেই দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে আক্রমণের 'তারিখ স্থির' হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
নির্দিষ্ট কোনো তারিখ ঘোষণা না করে স্থানীয় সময় সোমবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলনে, "হামাসের কাছ থেকে বিজয় লাভের জন্য রাফাতে প্রবেশ করে সেখানকার সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা জরুরি। এটি অবশ্যই হবে। একটি তারিখও স্থির করা হয়েছে।"
দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে দেড় মিলিয়নেরও বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। এখানে আক্রমণের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ইসরায়েল মিশরের সীমান্তবর্তী এই শহর থেকে মানুষ সরিয়ে নিতে ৪০,০০০ তাঁবু কিনছে বলে জানা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) নেতানিয়াহু নিজের বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, রাফাহ শহরের পাশপাশি আরও যেসব জায়গায় হামাসের ব্রিগেড রয়েছে, সে সমস্তকে নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাবে ইসরায়েল।
"পৃথিবীতে এমন কোন শক্তি নেই যে আমাদের বাধা দেবে। অনেক শক্তি আছে, যারা এটি করার চেষ্টা করছে, কিন্তু এটি কোনো কাজে আসবে না। কারণ এই শত্রুরা যা করেছে, তা আর কখনোই করার সুযোগ পাবে না," বলেন নেতানিয়াহু।
সপ্তাহের শেষে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় হামাসের সামনে একটি নতুন প্রস্তাব আনা হয়। যদিও সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতে কোনো চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে আল জাজিরার প্রতিবেদনে।
এদিকে, হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে। কিন্তু ওই প্রস্তাবে হামাসের কোনো দাবি মানা হয়নি বলেও জানায় তারা।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হামাসের সিনিয়র মুখপাত্র সামি আবু জাহরি আল জাজিরাকে বলেন, নেতানিয়াহুর এমন মন্তব্য– যুদ্ধবিরতির আলোচনা পুনরায় শুরু করার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
"যেকোনো আলোচনার সাফল্য নির্ভর করে আগ্রাসন অবসানের ওপর। আমাদের দাবি স্পষ্ট– আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের অবসান ঘটাতে হবে," বলেন জাহরি।
গাজা উপত্যকা থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং গাজার উত্তরে হাজার হাজার ফিলিস্তিনির বাধাহীন প্রত্যাবর্তন করার হামাসের দাবিকে প্রত্যাখান করেছে ইসরায়েল।
এদিকে, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, তারা গাজা থেকে তাদের কিছু স্থল বাহিনী প্রত্যাহার করে নিয়েছে। যদিও পূর্ব-পশ্চিম করিডোর রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার স্বার্থে সেখানে কিছু সেনা রয়েছে। মূলত এ কারণেই গাজা ছিটমহল এখন অনেকটা দ্বিখণ্ডিত। ইসরায়েলি সেনাদের অবস্থানের কারণে ফিলিস্তিনিরা ছিটমহলের এক দিক থেকে আরেক দিকে যেতে পারছে না।