সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা পেতে থাকতে হবে সুবিধাভোগীর নিজস্ব অ্যাকাউন্ট
২০২৫ সালের জুলাই থেকে সামাজিক নিরাপত্তার কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীর জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে নিবন্ধীত মোবাইল নম্বরে খোলা মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্টেই ভাতা দেবে সরকার।
অর্থাৎ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীর স্বজন বা আত্মীয়র মোবাইল নম্বরে খোলা কোনো অ্যাকাউন্টে ভাতা দেওয়া হবে না।
আগামী বছরের জুলাই থেকে এ নিয়ম কার্যকর করা হবে বলে গত ১ এপ্রিল অর্থমন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করে।
ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তাকর্মসূচির নগদ আর্থিক সহায়তা এমএফএস অ্যাকাউটের মাধ্যমে জি-টু-পি পদ্ধতিতে উপকারভোগীর নিজস্ব মোবাইল ফোনে পাঠানো হয়ে থাকে। তবে ক্ষেত্রবিশেষে অন্যের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরের বিপরীতে খোলা এমএসএস অ্যাকাউন্টেও আর্থিক সহায়তা গ্রহণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।এতে অনেক সময় উপকারভোগীর প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
এজন্য নতুন করে চালু করা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আর্থিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে আবশ্যিকভাবে উপকারভোগীর জাতীয় পরিচয় পত্রদ্বারা নিবন্ধিত মোবাইলে খোলা এমএফএস অ্যাকাউন্টে দিতে হবে বলে নির্দেশনা দিয়েছে অর্থবিভাগ।
পাশাপাশি চলমান যে সকল সামাজিক নিরাপত্তার আর্থিক সহায়তা উপকারভোগীর আত্মীয়-স্বজনের মোবাইলে খোলা এমএফএস অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়, সেগুলো ২০২৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সুবিধাভোগীর জাতীয় পরিচয় পত্রের বিপরীতে নিবন্ধিত মোবাইল ফোনে অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে হবে।
তবে উপকারভোগীদের মধ্যে যাদের হাতের আঙ্গুল নেই- এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, আঙ্গুলের ছাপ কাজ করেনা এমন বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি এবং ১৮ বছরের কম বয়সী উপকারভোগী- যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র এখনো হয়নি, তাদের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা শিথিল করা হবে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ৫৮ লাখ ব্যক্তিকে বয়স্কভাতা, ২৫ লাখ ৭৫ হাজার জনকে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, ২৯ লাখ জনকে অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, ৬৫ হাজার হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ভাতা, ১৩ লাখ ৪ হাজার জনকে মা ও শিশু সহায়তা ভাতা, ২ লাখ ১৯ জনকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দেওয়া হয় এমএফএস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে।
অর্থমন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কিছু পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতাভোগীদের অনেকেরই ভাতার টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে যাচ্ছে না। যাচ্ছে তাদের স্বজন বা আত্মীয়র অ্যাকাউন্টে। এতে সুবিধাভোগী সময়মত টাকা পান না বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে মোটেই টাকা পান না।
"এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য সুবিধাভোগীর নিজস্ব অ্যাকাউন্টে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাজটি যাতে সুবিধাভোগীরা সহজে করতে পারেন সেজন্য এক বছরের বেশি সময় দেওয়া হয়েছে," বলেন তিনি।