ইসরায়েল সমর্থক জেরি সিনফেল্ডের বক্তব্যের আগে সমাবর্তন অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে গেল শিক্ষার্থীরা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনের সমর্থক কিছু শিক্ষার্থী কৌতুক অভিনেতা জেরি সেইনফেল্ডের বক্তব্যের আগে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ (ওয়াকআউট) করে। খবর বিবিসি'র।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল স্টেডিয়ামের মঞ্চে যখন সিনফেল্ডকে সম্মানসূচক ডিগ্রি গ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়, তখন কিছু শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনের পতাকা নাড়িয়ে ও স্লোগান দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে এবং গাজায় যুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে সিনফেল্ড ইসরায়েলের সোচ্চার সমর্থক ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেক শিক্ষার্থী তার বক্তব্য শোনার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন, তার পক্ষেও কিছু স্লোগান শোনা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে শিক্ষার্থীদের উচ্চস্বরে চিৎকার ও 'ফ্রি প্যালেস্টাইন' স্লোগান দিতে শোনা গেছে।
সিনফেল্ড তার বক্তব্য শুরু করার সাথে সাথে আশেপাশের সারিতে বসে থাকা কিছু লোককেও চলে যেতে দেখা যায়।
হামাসের হামলার পরে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের সমর্থনে একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ৭০০ শিল্পীর মধ্যে ইহুদি এই কৌতুক অভিনেতাও ছিলেন।
তবে তিনি আর কোনও বাধা ছাড়াই তার বক্তৃতা দিতে সক্ষম হন। এমনকি শ্রোতাদের মধ্যে কেউ কেউ 'জেরি, জেরি' স্লোগান দিয়ে তার জন্য উল্লাস করেছিলেন।
স্নাতকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'আমি বলি, আপনি আপনার সুবিধার ব্যবহার করুন। নিউইয়র্কের একজন ইহুদি বালক হিসেবে আমি সেই সুযোগ নিয়েই বড় হয়েছি। আপনি যদি কৌতুক অভিনেতা হতে চান তবে এটি একটি সৌভাগ্যের বিষয়।'
ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া দুই সন্তানের বাবা সেইনফেল্ড ডিসেম্বরে ইসরায়েলের একটি কিবুটজ পরিদর্শন করেন এবং হামাস কর্তৃক গাজায় অপহৃত জিম্মিদের কয়েকজনের পরিবারের সাথে দেখা করেন।
অনুষ্ঠান শেষে ডিউক ইউনিভার্সিটির যোগাযোগ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ট্রাম্বল বিবিসির যুক্তরাষ্ট্র অংশীদার সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, 'আমরা আমাদের সম্প্রদায়ের অনুভূতির গভীরতা বুঝতে পারি। স্নাতক এবং তাদের পরিবারকে তাদের অর্জন উদযাপন করতে বাধা না দিয়ে, সারা বছরের মতো আমরা ডিউকের প্রত্যেকের শান্তিপূর্ণভাবে তাদের মতামত প্রকাশের অধিকারকে সম্মান করি।'
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ধারাবাহিক বিক্ষোভের সর্বশেষ ঘটনা এটি।
চলমান যুদ্ধের মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন কোম্পানি ও ব্যক্তিদের বয়কট করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে শিক্ষার্থীরা।
গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে মেতে উঠেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে পুলিশ, পালটা বিক্ষোভকারীদেরও সংঘর্ষ হয়েছে। ফিলিস্তিনে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা এবং ইসরায়েলের দখলদারত্বের অবসান দাবি জানাচ্ছেন তারা।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের বন্দুকধারীদের গাজার সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে ঢুকে প্রায় ১২০০ মানুষকে হত্যা করে।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর থেকে গাজায় ৩৪ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন