নতুন কারিকুলামের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এসএসসি পরীক্ষা হবে ডিসেম্বরে
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় ও শিক্ষাক্রমে বড় পরিবর্তন আনছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষাগুলো ফেব্রুয়ারির বদলে শিক্ষাবর্ষের শেষের দিকে বার্ষিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এই পরিবর্তনের লক্ষ্য নতুন শিক্ষাক্রমের কাঠামোর সঙ্গে পরীক্ষার সমন্বয় করা।
নতুন কারিকুলামে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ওপর ভিত্তি করে। পরীক্ষায় লিখিত মূল্যায়নে ৬৫ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নে থাকবে ৩৫ শতাংশ। পুরো পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টাব্যাপী।
যেসব বিষয়ের ওপর পরীক্ষা হবে, সেগুলো হলো— বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, ধর্মশিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি। আগে এসএসসি পরীক্ষা হতো ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে পড়া বিষয়গুলোর ওপর; নতুন পদ্ধতিতে শুধু ১০ম শ্রেণির বিষয়গুলোর ওপর পরীক্ষা হবে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম সংশোধিত কাঠামোর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, 'নবম শ্রেণির পরীক্ষাটি নবম শ্রেণির পাঠ্যক্রমের মূল্যায়ন করবে। আর দশম শ্রেণির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে পাবলিক পরীক্ষা হিসেবে, এতে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমের মূল্যায়ন করা হবে।'
২০২৫ সালের ডিসেম্বরে নতুন ব্যবস্থার আওতায় প্রথম পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। ফরহাদুল ইসলাম জানান, দশটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে, এবং প্রতিটি বিষয়ের একটি করে পত্র থাকবে।
পরীক্ষার সময় বাড়ানোসহ এসএসসিতে আরও একাধিক পরিবর্তন আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ফরহাদুল ইসলাম। আসন্ন একটি সভায় এসবের বিস্তারিত চূড়ান্ত করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী ২৭ মেতে একটি কর্মশালাতেও কিছু বাড়তি সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
নতুন কারিকুলাম কমিটি ঠিক করেছে, স্কুলের অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক উভয় পরীক্ষাতেই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সাতটি ধাপে সম্পন্ন করা হবে।
এর ফলে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ডিসেম্বরে। তবে পরীক্ষার নাম পরিবর্তন বদলানো হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। নতুন শিক্ষাক্রম-সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত মে মাসের শেষের দিকে চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে মূল্যায়ন কমিটি প্রস্তাব করেছিল যে ২০২৬ সালে প্রথম নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে এসএসসি পরীক্ষা হবে। এই পাবলিক পরীক্ষা হবে দশটি বিষয়ের ওপর, সবগুলোই লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে।
প্রতিটি বিষয় মূল্যায়নের জন্য বরাদ্দ বিরতিসহ শিক্ষার্থীদের পুরো ৫ ঘণ্টা সময়কালের জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকতে হবে। বর্তমান ব্যবস্থার মতোই নির্ধারিত কেন্দ্রে মূল্যায়ন করা হবে।
সংশোধিত এসএসসি পরীক্ষা কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক ৬০০ জন শিক্ষকের সমন্বয়ে রিসোর্স পুল, অর্থাৎ বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হবে। এই শিক্ষকদের এনসিটিবির বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে সাত দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এছাড়া ১১টি শিক্ষা বোর্ডের প্রতিটির জন্য প্রতি বিষয়ে চারজন করে মোট ৪৪ জন শিক্ষককে চূড়ান্ত করা হবে।