যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড গড়া জয়ে শুরু বিশ্বকাপ
কিছুদিন আগেই সামর্থ্যের প্রমাণ মেলে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট দলের। সহযোগী দেশটি বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেট খেলে তিন ম্যাচের সিরিজ জিতে নেয়। বিশ্বকাপে আরও রঙিন পারফরম্যান্স শুরু করলো তারা। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ম্যাচেই রেকর্ড গড়া জয় তুলে নিলো, তাদের সামনে দাঁড়াতেই পারলো না প্রতিবেশী দেশ কানাডা।
রোববার ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে কানাডাকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে সহ-আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৫ রান তাড়া করে জেতে স্বাগতিকরা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটা তাদের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। এর আগে তাদের সফল রান তাড়া ছিল ১৬৯, সেটাও ছিল কানাডার বিপক্ষে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার ঘটনা আছে মাত্র দুটি। ২০১৬ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৩০ রান টপকে রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ড। ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ২০৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জেতে দক্ষিণ আফ্রিকা।
টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা কানাডা বড় সংগ্রহই গড়ে। নাভনিত ধালিওয়াল ও রিকোলাস কির্তনের হাফ সেঞ্চুরির পর শ্রেয়ান মোভভার ঝড়ো ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৯৪ রান তোলে তারা। যা বিশ্বকাপে আইসিসি সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড।
যদিও রেকর্ডটি টেকে মাত্র দুই ঘণ্টা। অ্যান্ড্রিয়েস গাউসের হাফ সেঞ্চুরির পর ছক্কার ঝড়ে সেঞ্চুরির ছুঁইছুঁই ইনিংসে ১৪ বল হাতে রেখেই যুক্তরাষ্ট্রকে জেতান ম্যাচসেরা অ্যারন জোন্স। নিজেদের রেকর্ড জয়ের সঙ্গে সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডটিও হয়ে যায় তাদের।
যদিও বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতো হয় যুক্তরাষ্ট্রের, প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় তারা। স্কোরকার্ডে কোনো রান যোগ না হতেই ফিরে যান ওপেনার স্টিভেন টেলর। কলিম সানার দারুণ ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ৪২ রানের জুটি গড়ে এই চাপ সামলান অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল ও গাউস।
মোনাঙ্ক ১৬ রান করে ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্রকে আর বেগ পেতে হয়নি। তৃতীয় উইকেটে জুটি বেধে শাসন করে খেলে যান গাউস ও জোন্স। মাত্র ৫৮ বলে ১৩১ রানের জুটি গড়েন এ দুজন। যা টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় উইকেটে তো বাটেই, যেকোনো উইকেটেই যুক্তরাষ্ট্রের সেরা জুটি। এই জুটিতেই জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের।
দলীয় ১৭৩ রানে থামেন গাউস। ডানহাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ৪৬ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৫ রান করেন। কোরি এন্ডারসনকে সঙ্গে নিয়ে বাকি পথ পাড়ি দেন জয়ের নায়ক জোন্স। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪০ বলে ৪টি চার ও ১০টি ছক্কায় ৯৪ রানের দুর্বার ইনিংস খেলেও অপরাজিত থাকেন, এটাই তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। স্বপ্নের ইনিংস খেলার পথে দেশের পক্ষে ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা মারার রেকর্ডও গড়েন তিনি। কানাডার কলিম সানা, দিলন হেলিগার ও নিখিল দত্ত একটি করে উইকেট পান।
এর আগে ব্যাটিং করা কানাডার পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন নানভিত। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হলেও আজ ইনিংস উদ্বোধন করা ডানহাতি ব্যাটসম্যান ৪৪ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬১ রান করেন। আরেক ওপেনার অ্যারন জনসন ১৬ বলে ২৩ রান করেন। কির্তন ৩১ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় করেন ৫১ রান। ১৬ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় অপরাজিত ৩২ রান করেন শ্রেয়াস। যুক্তরাষ্ট্রের আলী খান, হারমিত সিং ও কোরি এন্ডারসন একটি করে উইকেট নেন।