‘খুব ভালো, স্বাধীনতা দেন’- অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে শরিফুল
লম্বা সময় ধরে নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে রান নেই। সর্বশেষ তিন টেস্টের ছয় ইনিংসে তার সর্বোচ্চ রান ২০। টি-টোয়েন্টিতেও একই দশা, শেষ আট ম্যাচে নেই কোনো হাফ সেঞ্চুরি। অপেক্ষাকৃত দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও হাসেনি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ব্যাট। দলের নেতৃত্বভার আবার তার কাঁধে, দল ভালো না করায় মাঝে মাঝে তার দিকেও ওঠে আঙুল। সব মিলিয়ে সময়টা ভালো যাচ্ছে না শান্তর।
যদিও ব্যাটসম্যান শান্তকে নিয়ে সমালোচনা থাকলেও অধিনায়ক শান্তকে তেমন কারও আপত্তি নেই। অনেকের চোখেই বর্তমান বাংলাদেশ দলে নেতৃত্বে তিনিই সবচেয়ে যোগ্য। দলের ক্রিকেটাররাও তাই মনে করেন। এ কারণেই বাংলাদেশ দলের সবার কাছে পছন্দের ব্যক্তিত্ব শান্ত। শরিফুল ইসলামের কাছে তিনি ভালো অধিনায়ক। বাঁহাতি এই পেসার জানালেন, বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করা শান্ত দলের ক্রিকেটারদের স্বাধীনতা দেন।
বিশ্বকাপ মিশন শুরুর আগে 'গ্রিন-রেড স্টোরি' নামে ক্রিকেটারদের সিরিজ সাক্ষাৎকার নিজেদের ফেসবুক পেজে পোস্ট করে আসছে বিসিবি। আজকের পর্বে দল, নিজের স্বপ্নপূরণ, সতীর্থ, অধিনায়ককে নিয়ে কথা বলেন শরিফুল।
শান্তকে নিয়ে তিনি বলেন, 'খুব ভালো, স্বাধীনতা দেন, আর খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেন। সবাই (দলের) উনাকে খুব পছন্দ করেন। কারণ, বিশেষ করে আমরা বোলাররা যদি কিছু একটা করতে চাই, উনাকে যদি বলি, উনি সেটা খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। সব অধিনায়কই দেখেন, শান্ত ভাইও দেখেন। উনার সঙ্গে অনেক দিন ধরে খেলছি, সব মিলিয়ে উনি আন্তরিক।'
দলের বাকিদের কাছ থেকেও সমর্থন পান শরিফুল। পরিবার, স্ত্রীর কথাও উল্লেখ করেন তিনি, 'খেলার সময় বড় ভাইরা তো অবশ্যই সাপোর্ট করেন। আমি যখন নিউজিল্যান্ডে খেলছিলাম, মুশফিক ভাই আমাকে একটা ভালো কথা বলেছিলেন। ওটা এখনও আমার কানে বাজে, কথাটা গোপনই থাক। এমনিতে পরিবার আমাকে খুব সাপোর্ট করে, বিশেষ করে আমার স্ত্রী। সব সময় খেলতে যাওয়ার আগে কথা হয়, ইতিবাচক কথা হয়। মাঠে যখন ঢুকি, দুই একটা ওভার যদি খারাপও হয়, তখন চিন্তা করি ভালো সময় আসবে, পরের ওভার ভালো করবো।'
বাংলাদেশ দলটাকেও পরিবার মনে হয় শরিফুলের কাছে। যে পরিবারে তার সবচেয়ে পছন্দের মানুষ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার এমনভাবে মেশেন, কেউ বুঝতেই পারেন না বয়সের দূরত্ব। শরিফুলের ভাষায়, 'দলে আমরা খুব কমই সিনিয়র-জুনিয়র দেখি। আমরা সবাই পরিবার হিসেবে দেখি। সবারই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ। রিয়াদ ভাই সবার সঙ্গে বেশি মেশেন। উনি আমাদের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র, উনি এমনভাবে মেশেন, মনেই হয় না আমাদের সঙ্গে উনার বয়সের এতো ব্যবধান। উনি পুরো দলকে চাঙ্গা করে রাখেন। মনে হয় যে অনেক আগে থেকে বা অনেক ছোট থেকে আমরা একসাথে খেলছি।'
২০২১ সালে জাতীয় দলে অভিষেক শরিফুলের। ওই বছরই খেলেন ওমান ও আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। পরের বছর অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৩ সালে ভারতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে খেলেন তিনি। তবু নতুন একটি বিশ্বকাপ মিশনে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে রোমাঞ্চিত থাকেন শরিফুল, 'বিশ্বকাপটা দুনিয়ার সবাই দেখে, যারা ক্রিকেটের অঞ্চলের আর কি। সবারই চোখ থাকে এখানে। এই কারণে আমার মনে হয়, বিশ্বকাপ খেলতে পারা বা খেলতে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি একটা অনুভূতি কাজ করে অন্যান্য সিরিজের থেকে।'