সিলেটে বন্যার মধ্যেই নৌকায় করে কেন্দ্রে এলেন ভোটাররা
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে সিলেটে বন্যার মধ্যেই দুই উপজেলা কানাইঘাট ও জকিগঞ্জে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বন্যায় সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌকায় করে ভোটাররা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসেন। তবে বেশিরভাগ কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিল।
জকিগঞ্জের কোনাগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, পুরুষ ভোটারদের কক্ষের সামনে পাঁচ থেকে ছয়জন ভোটার দাঁড়ানো। নারী ভোটারদের কক্ষের সামনে ছিলেন দুজন ভোটার।
এছাড়া প্রেমনগর গ্রামের পুরুষ ভোটারদের দুই নম্বর কক্ষে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টায় ভোট পড়ে মাত্র দুটি।
উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের কোনাগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আসার সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নৌকায় করে অনেক ভোটারকে কেন্দ্রে আসতে দেখা যায়।
এ কেন্দ্রের ভোটার রজত দেব বলেন, 'বন্যার কারণে সড়ক ডুবে গেছে। ঘর থেকে বের হওয়ারই উপায় নেই। প্রার্থীর লোকজন বাড়িতে নৌকা পাঠিয়েছেন। তাই ভোট দিতে আসছি।'
কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জ্যোতিষ মজুমদার বলেন, 'বন্যার কারণে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম। এছাড়া সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি থামলে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে পারে।'
সিলেট জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়ন প্লাবিত রয়েছে। এ উপজেলার ১১৩ গ্রাম এখন পর্যন্ত প্লাবিত রয়েছে। এসব এলাকায় বন্যাকবলিত মানুষের সংখ্যা এক লাখ ৫৬ হাজার ১৪৭ জন। উপজেলার ৫৫ আশ্রয়কেন্দ্রে ৪০৮ জন মানুষ অবস্থান করছেন।
অন্যদিকে কানাইঘাট উপজেলায়ও পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন প্লাবিত রয়েছে। এই উপজেলায় ১৯০ গ্রাম এখনও প্লাবিত। এসব এলাকায় বন্যাকবলিত মানুষের সংখ্যা ৮০ হাজার ৬১০ জন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, কানাইঘাট উপজেলায় দুই লাখ আট হাজার ৯৯৯ জন ভোটার রয়েছেন। এছাড়া জকিগঞ্জে মোট ভোটার এক লাখ ৯১ হাজার ৫১৩ জন।
দুই উপজেলায় ২৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে জকিগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অন্যদিকে কানাইঘাট উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সাতজন, ভাইস চেয়ারম্যন পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রের ইমরুল হাসান বলেন, 'পানি উঠে যাওয়ায় জকিগঞ্জের পাঁচটি ও কানাইঘাটের চারটি ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকিগুলোতে কোনো সমস্যা নেই। শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ চলছে।'