সিনহা হত্যাকাণ্ড: প্রকৃত সত্য উদঘাটনে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন দাবি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর
কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর রাশেদ মোহাম্মদ সিনহার খুনের ঘটনা তদন্তে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
''মেজর (অব:) সিনহা হত্যার পেছনে শুধু ওসি প্রদীপ জড়িত নাকি তার সঙ্গে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা- 'র' এবং ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদও ছিল- তা খুঁজে বের করতে একটি স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন প্রয়োজন'' বলে মন্তব্য করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আজ রোববার (৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন।
এসময় তিনি বলেন, ''এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশি তদন্ত উপযুক্ত পদক্ষেপ নয়, বলেই আমি মনে করি। একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনের মাধ্যমেই তদন্ত করতে হবে।''
তিনি আরো বলেন, একজন সাবেক সেনা সদস্যকে এভাবে হত্যার পেছনে প্রকৃত সত্য অনুসন্ধানে সরকার যদি কোনো স্বাধীন তদন্ত কমিশন না গঠন করে, তাহলে তা হবে পুরো দেশের জন্যেই দুর্ভাগ্যজনক।
প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশটির আয়োজন করছিল, ভাসানী অনুসারি পরিষদ। সমাবেশটি ভারতের পানি সম্পদ ব্যবহার নীতির বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রতিবেশী দেশটির অবিবেচক নীতির কারণে গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকাল উভয় সময়েই বাংলাদেশি নাগরিকদের বিপুল দুর্ভোগে পড়ার কথা তুলে ধরা হয়।
এর আগে গত ৩১ জুলাই টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া পুলিশ তল্লাশী চৌকিতে হত্যার শিকার হন মেজর (অব:) সিনহা।
এরপর গত ২ আগস্ট অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দাবি, সমগ্র পুলিশ বাহিনীতে মাত্র ১০ শতাংশ সদস্য ওসি প্রদীপ কুমার দাসের মতো দুর্নীতিপরায়ণ হলেও বাকিরা সৎ।
সীমান্ত বাংলাদেশিদের নির্বিচারে হত্যা চালু রাখার জন্য এসময় তিনি ভারতের তীব্র সমালোচনা করেন।
''প্রতিদিন ভারতের সঙ্গে সীমান্তে আমাদের নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে। এই বিষয়ে আমাদের কোনো প্রতিবাদ জানানোর শক্তি নেই। কিন্তু, প্রতিবেশী নেপাল এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে পার্লামেন্টে একটি আইন পাস করেছে। আমাদের একজন মন্ত্রী বলেছেন, ভারতের সঙ্গে নাকি আমাদের রক্তের সম্পর্ক। কিন্তু, এই রক্ত দূষিত। নোংরা রক্ত দিয়ে কী হবে? আমাদের বিশুদ্ধ রক্ত দরকার।
জনগণ যদি প্রতিবাদে সোচ্চার না হয়, তবে বাংলাদেশ ভারতীয় আগ্রাসনমুক্ত হবে না বলেও জানান এ মুক্তিযোদ্ধা।
প্রেসক্লাবের এ প্রতিবাদ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির নেতা সাইফুল হক, গণ-সংহতি আন্দোলনের মূখ্য সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, বাংলাদেশ সংসদীয় দলের নেতা রাশিদ ফিরোজ এবং ডাকসুর সহ-সভাপতি নুরুল হক নুরু সহ আরো অনেকে।
বিক্ষোভ সমাবেশের আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারি পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম।