লেবার পার্টির কাছে হেরে গেলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস
লেবার পার্টির টেরি জার্মির কাছে আসন হারিয়েছেন ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। সাউথ ওয়েস্ট নরফোক আসনে টেরি জার্মির কাছে ৬৩০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন তিনি।
বিবিসির নির্বাচনী তথ্য অনুযায়ী, ট্রাস ১১ হাজার ৮৪৭ ভোট (২৬.৭%) পেয়ে জয়ী হয়েছেন এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ প্রার্থী টেরি জার্মি ১১ হাজার ২১৭ (২৫.৩%) ভোট পেয়েছেন।
কনজারভেটিভ পার্টির জন্য এটি অন্যতম বড় পরাজয়। ১৯৬৪ সাল থেকে এই আসন কনজারভেটিভদের দখলে ছিল এবং ২০১০ সাল থেকে এই আসনটিতে এমপি লিজ ট্রাস।
২০১৯ সালেও প্রায় ২৬ হাজার ভোট পেয়েছিলেন ট্রাস, তাই ধারণা করা হয়েছিল এই বছরও খুব সহজে আসনটি ধরে রাখবেন তিনি। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে কম সময়—মাত্র ৪৪ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীত্ব করা ট্রাস, লেবার পার্টির কাছে একটুর জন্য ধরাশায়ী হয়েছেন। গতবারের চেয়ে এবার ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট হারিয়েছেন তিনি। দুই বছর আগেও প্রধানমন্ত্রীর আসনে থাকা ট্রাস এবার এমপি পদও হারিয়ে ফেলবেন তা আশা করেননি কেউ ।
২০১০ সালে এমপি হিসেবে প্রথম পার্লামেন্টে আসেন ট্রাস। চার বছর এমপির দায়িত্ব পালন করার পর মন্ত্রিসভায় স্থান পান। ডেভিড ক্যামেরন ও টেরেসা মে সরকারে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন ট্রাস। ২০২১ সালে তিনি পররাষ্ট্র সচিব হন।
বর্তমানে রক্ষণশীল দলের রাজনীতি করলেও ট্রাসের মা-বাবা ছিলেন বামপন্থী। ট্রাস ছিলেন মধ্যপন্থী লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের কিশোরী সদস্য। মাত্র ১৯ বছর বয়সে রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির আহ্বান জানিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন ৪৭ বছর বয়সী ট্রাস। এজন্য ২০১৬ সালে ইইউয়ে থেকে যাওয়া নিয়ে আয়োজিত গণভোটে বরিস জনসনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যে ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী বামপন্থী দল লেবার পার্টি। এরইসঙ্গে, ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন লেবার নেতা কিয়ার স্টারমার। এবং দীর্ঘ ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে সরছে ঋষি সুনাকের দল কনজারভেটিভ পার্টি। বামপন্থী লেবার পার্টি পার্লামেন্টের মোট ৬৫০টি আসনের মধ্যে ৩২৬টির বেশি আসনে জয়ী হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যেকোনো দলকে এককভাবে ৩২৬টি আসনে জয় পেতে হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ন্যূনতম প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে বিরোধী দল লেবার পার্টি। পাঁচ বছর আগে, ২০১৯ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর এটি লেবার পার্টির জন্য এক ভূমিধস জয়।
স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ শুরু করে যুক্তরাজ্য। ভোট চলে স্থানীয় সময় রাত ১০টা পর্যন্ত। মোট ৯৮টি রাজনৈতিক দল এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী। এরমধ্যে ৩১৭টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ৪৫৯ জন।