পেনসিলভানিয়ার সমাবেশে গুলিতে আহত ট্রাম্প, নিহত অন্তত ২
নির্বাচনি প্রচারসভায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলা হয়েছে। পেনসিলভানিয়ার বাটলার-এ স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অন্তত একজন বন্দুকধারী ও প্রচারসভায় উপস্থিত একজন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সিক্রেট সার্ভিস। এছাড়া আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। গুলিতে আহত হয়েছেন ট্রাম্প, তবে তা গুরুতর নয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প বলেছেন, তার ডান কানের ওপরের অংশে গুলি লেগেছে। সিক্রেট সার্ভিস বলেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট নিরাপদে আছেন, গুলি করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়েছে। একজন মুখপাত্রও নিশ্চিত করেছেন, ট্রাম্প 'ঠিক আছেন'।
হামলার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রাম্প মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় সময় হঠাৎ তার কান ঘেঁষে একটি গুলি চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চে বসে পড়েন তিনি। খানিকক্ষণ পরই অবশ্য উঠে দাঁড়ান।
ঘটনার পরপরই সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা ট্রাম্পকে দ্রুত একটি গাড়িতে তোলেন। এ সময় ট্রাম্পের কান ও গাল বেয়ে রক্ত পড়তে দেখা যায়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেন, তিনি একজন লোককে রাইফেল হাতে মঞ্চের পাশের একটি ভবনের ছাদে উঠতে দেখেছেন। তখন তিনি ও আশপাশের লোকজন লোকটিকে দেখিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সতর্ক করতে চেষ্টা করেন।
ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, 'আমি তখন ভাবছিলাম, ট্রাম্প কেন এখনও বক্তৃতা দিচ্ছেন, ওরা তাকে এখনও মঞ্চ থেকে নামিয়ে নিচ্ছে না কেন। এরপরই পাঁচটার মতো গুলি হলো।'
এ ঘটনায় সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যদের গুলিতে এক আততায়ীকে ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন বলে সিএনএন জানিয়েছে।
শনিবারের এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ট্রাম্প নিরাপদ থাকায় তিনি 'কৃতজ্ঞ'।
নির্বাচনে প্রচারে উপস্থিত ট্রাম্প সমর্থক রন মুজ রয়টার্সকে বলেন, 'আমি চারটির মতো গুলির আওয়াজ শুনলাম, তারপর দেখলাম মানুষ বসে পড়ছে। এরপর ট্রাম্পকে দেখলাম ঝট করে বসে পড়তে। এরপরই সিক্রেট সার্ভিসের লোক লাফিয়ে মঞ্চে উঠে এসে যত দ্রুত সম্ভব তাকে নিরাপত্তা দেয়।'
মুজ জানান, এরপরই তিনি একজন লোককে সামরিক ইউনিফর্ম পরা অফিসারদের ধাওয়া খেয়ে দৌড়াতে দেখেন। এরপর তিনি গুলির আওয়াজও শোনেন, কিন্তু কে গুলি করেছে তা বলতে পারেননি। ততক্ষণে স্নাইপাররা মঞ্চের পেছনের ওয়্যারহাউসের ছাদে উঠে যান বলে জানান মুজ।
ট্রাম্পের প্রচারণা দল জানিয়েছে, একটি স্থানীয় হাসপাতালে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর তিনি হাসপাতাল ছেড়েছেন। ট্রাম্পের ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র সিবিএস নিউজকে বলেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট এখন 'ঠিক আছেন'।
সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপস্থিত সাংবাদিকরা অনেকগুলো গুলির আওয়াজ শুনতে পেয়েছেন।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রের বরাত দিয়ে সিবিএস নিউজ বলেছে, সন্দেহভাজন আততায়ী ২০০-৩০০ ফুট দূর থেকে এআর-স্টাইল রাইফেল দিয়ে গুলি করেছিলেন। সিক্রেট সার্ভিসের নজরদারি এলাকার বাইরে একটি বাড়ির ছাদ থেকে গুলি করেছেন তিনি।
রাত সোয়া ৮টার দিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, তিনি তখনও পর্যন্ত ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি, তবে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।
বাইডেন বলেন, 'আমেরিকায় এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এটা জঘন্য। জঘন্য।'
আরও অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।