আবু সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে ফরেনসিক ও স্যাটেলাইটের ছবি যা বলছে
রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, অন্তত দুজন পুলিশ রাস্তার ওপার থেকে সরাসরি আবু সাঈদকে লক্ষ্য করে ১২-গেজের শটগানের গুলি ছুঁড়েছে।
ঘটনার দুটি ভিডিও ক্লিপ যাচাইয়ের পর সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়।
ঘটনার পরদিন ১৭ জুলাই সংস্থাটি বলে, 'পুলিশ অন্তত দুবার গুলি চালায়। গুলি লাগায় সাঈদ তার বুক চেপে ধরেন।'
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সাঈদ এবং পুলিশের অবস্থান নির্ধারণে স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে এবং দেখতে পায় যে গুলি চালানোর সময় তারা প্রায় ১৫ মিটার দূরত্বে ছিল।
ডেরিক পাউন্ডার নামে একজন স্বাধীন ফরেনসিক প্যাথলজিস্ট সাঈদের বুকে ক্ষতের ছবিগুলো পরীক্ষা করে দেখেছেন। তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে বলেছেন, সাঈদের বুকের ক্ষতগুলো ছররা গুলির (বার্ডশট) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক গবেষক তাকবির হুদা বলেন, 'আপাতদৃষ্টিতে যা মনে হচ্ছে তা হলো এ হামলা ইচ্ছাকৃত এবং কোনো প্রকার উসকানি ছাড়াই এমন ব্যক্তির ওপর হামলা করা হয়েছে, যিনি কি না পুলিশের জন্য কোনো ধরনের হুমকি সৃষ্টি করেননি। হামলায় যে গোলাবারুদ ব্যবহার করা হয়েছে, তা মূলত শিকারের জন্য তৈরি করা। কোনো বিক্ষোভে এটি ব্যবহার করা অত্যন্ত বিপজ্জনক ও বেআইনি।'
সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার মুহূর্তটি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে এবং লন্ডনভিত্তিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যাচাই করেছে।
তবে ভিডিওতে সব স্পষ্ট দেখা গেলেও রংপুরের তাজহাট থানায় পুলিশের দায়ের করা ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট (এফআইআর) বলছে ভিন্ন কথা।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক বিভূতি ভূষণ রায়ের দায়ের করা ওই রিপোর্টে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন দিক থেকে অস্ত্র এবং ইট ছুঁড়ে মারে এবং একপর্যায়ে একজন ছাত্রকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখা যায়। সাঈদের সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাঈদকে মৃত ঘোষণা করেন।