৫৮ বছর বয়সে অলিম্পিকে খেলার স্বপ্নপূরণ
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়- উক্তিটি খুব প্রচলিত। স্বপ্ন পূরণে মানুুষ কতো কী-ই না করেন। জিং ঝিয়িংকেই দেখুন, ৫৮ বছর বয়সে এসে অলিম্পিক খেলার স্বপ্ন পূরণ হলো তার। নামই বলে দেয় চীনে জন্ম ঝিয়িংয়ের। যদিও তার পরিচয় পাল্টে গেছে, চীনে জন্ম হলেও তিনি এখন চিলির ক্রীড়াবিদ। চলতি প্যারিস অলিম্পিকে চিলির প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি।
টেবিল টেনিস খেলোয়াড় ঝিয়িংয়ের জন্ম চীনে, পরবর্তীতে চিলিতে গিয়ে স্থায়ী হন তিনি। অল্প বয়সেই চীন জাতীয় দলের হয়ে খেলার স্বপ্ন পূরণ হলেও মাত্র ২০ বছর বয়সেই অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। এরপর চিলিতে গিয়ে স্থায়ী হন, গত ৩৫ বছর ধরে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে বাস করছেন ঝিয়িং।
প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় টেবিল টেনিসের ব্যাট হাতেই নেননি ঝিয়িং। করোনা মহামারির সময় নতুন করে টেবিল টেনিস খেলার আগ্রহ পান তিনি, শুরু করেন অনুশীলন। দ্রুতই নিজের র্যাঙ্কিংয়ের উন্নতি করে দক্ষিণ আমেরিকার সেরা নারী খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন ঝিয়িং। আর এই ফিরে আসা তাকে নিয়ে গেছে প্যারিস পর্যন্ত। যদিও প্রাথমিক রাউন্ডে লেবাননের মারিয়ানা সাহাকিয়ানের বিপক্ষে হেরে যান তিনি।
ইনডোর ভর্তি দর্শকদের সামনে খেলতে নেমে কিছুটা আবেগি হয়ে পড়েন ঝিয়িং। চিলির সমর্থকরা তাকে পুরো ম্যাচেই দারুণ সমর্থন যুগিয়েছেন। ম্যাচ শেষে ঝিয়িং বলেন, '৩০ বছর পর আমি আবারও টেবিল টেনিসে ফিরেছি। এই বয়সে অলিম্পিকে খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। প্রতিটা প্রতিযোগিতায় আমি নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।'
চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গুয়াংজুতে জন্ম নেওয়া ঝিয়িং মাত্র ১৬ বছর বয়সে দেশটির জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান। ১৯৮৮ অলিম্পিকে প্রথমবারের মতো টেবিল টেনিস যুক্ত হয়, কিন্তু এর আগেই খেলা ছাড়েন তিনি। চিলিতে গিয়ে স্কুলের বাচ্চাদের কোচিং করান, তবে ধীরে ধীরে টেবিল টেনিসের পাট চুকিয়ে তিনি ব্যবসা শুরু করেন।
আবারও টেবিল টেনিস ব্যাট হাতে তুলে নেওয়া ঝিয়িং অল্পতেই হাল ছাড়ছেন না। যতোদিন ফিট থাকবেন, ততোদিন খেলা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এবারের অলিম্পিকে অবশ্য ঝিয়িং-ই সবচেয়ে বেশি বয়সী নারী ক্রীড়াবিদ নন। টেবিল টেনিসেই লুক্সেমবার্গের নি জিয়ালিয়ান ৬১ বছর বয়সে খেলতে এসে রেকর্ড গড়েছেন। জিয়ালিয়ানেরও জন্ম চীনে, পরবর্তীতে তিনি লুক্সেমবার্গে পাড়ি জমান। ঝিয়িং দীর্ঘ সময় খেলার বাইরে থাকলেও জিয়ালিয়ান নিয়মিত খেলা চালিয়ে গেছেন।