সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে: সোহেল তাজ
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ সাম্য আর নায্যতার ভিত্তিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, "সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে – আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। বিচার ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে রাজনীতির প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। সব বাহিনীকে জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।"
বুধবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
এ আন্দোলনে অনেক নিরীহ ছাত্র-জনতার প্রাণহানি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "ছাত্র আন্দোলনের বিজয় পরবর্তী দেশজুড়ে নানান প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ড এবং সুযোগ-সন্ধানীদের তাণ্ডব দেখে, লাখো কোটি মানুষের মতো আমিও ব্যথিত। এই হত্যাযজ্ঞ আর ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের জন্যই কি ছাত্রজনতা রাজপথে নেমেছিল? দেশের সম্পদ ও ঐতিহ্য ধ্বংস করে নতুন প্রজন্মকে কী বার্তা দিচ্ছি ?"
সোহেল তাজ বলেন, "আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যারা অন্যায় করেছে– তার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। কিন্তু সবাইকে কেন আমরা প্রতিহিংসার মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছি?"
তিনি গঠিত হতে যাওয়া অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পারিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সাধারণ মানুষের জানমাল হেফাজত করার আহ্বান জানান।
সোহেল তাজ আরো বলেছেন, বাংলাদেশে কোনো শাসকই যে ইচ্ছে খেয়াল-খুশিমতো দেশ চালাতে পারবে না— তা কোটা আন্দোলন থেকে স্পষ্ট হয়েছে। "এই আন্দোলন– একটি বার্তা স্পষ্ট। বাংলাদেশে কোনো শাসকই ইচ্ছে, খুশিমতো দেশ চালাতে পারবে না। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত না হলে– আবারো তারুণ্য গর্জে উঠবে। কোনো শাসকের অন্যায় মেনে নিবে না ছাত্রজনতাসহ সকল নাগরিক।"
এসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "গত কয়েকদিন দেশের নানা জায়গায় ভিন্ন ধর্মের মানুষের উপাসনালয়– মন্দির, গির্জায় আক্রমণ হয়েছে। অনেকের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। অনেক মানুষ নিহত আর আহত হয়েছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগসহ অনেক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রয়েছে। অনেক নিরীহ কর্মী প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে।"
তিনি বলেন, "সরকার, প্রশাসনসহ আওয়ামী লীগের যেসব নেতা-কর্মী দুর্নীতি, হত্যা, গুমের সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু, তার পাশাপাশি একজন নিরীহ কর্মীরও এই দেশে বাঁচার অধিকার আছে।"
অরাজকতা বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ পথ হারিয়ে ফেলবে।"
"যে সংস্কারের জন্য আন্দোলন হয়েছিল— সেদিকে নজর দিতে হবে। আমাদের মতভিন্নতা থাকবে, ভিন্ন মতকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। আন্দোলনকারী ছাত্রজনতার মতো আমারও দাবি দেশে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক," তিনি আরো যোগ করেন।