ব্যাংকগুলোর চিফ অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং অফিসারদের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছে বিএফআইইউ
দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর চিফ অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কমপ্লায়েন্স অফিসারদের আজ বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক সভায় ডেকেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
অ্যাসোসিয়েশন অভ অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কমপ্লায়েন্স অফিসারস অভ ব্যাংকস ইন বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক ও ব্র্যাক ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী মইনুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিএফআইইউতে এ বৈঠক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কয়েকটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিএফআইইউ কেন তাদেরকে ডেকেছে, এ ব্যাপারে তাদের কোনো ধারণা নেই। তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অর্থপাচার রোধ করতে নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন।
বিএফআইইউয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, 'বৃহস্পতিবার সকালে ও দুপুরে দুই ধাপে বিভিন্ন ব্যাংকের চিফ অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কমপ্লায়েন্স অফিসারদের সঙ্গে আমাদের সভা হবে।
'দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যেকোনো ধরনের সন্দেহজনক লেনদেন হলে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে সন্দেহজনক লেনদেন (এসটিআর) ও সন্দেহজনক কার্যক্রম (এসএআর) প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হবে।'
এছাড়া অর্থপাচার প্রতিরোধে বিভিন্ন নির্দেশনাও থাকতে পারে বলে জানান তিনি। 'এসটিআর বা এসএআর অনুযায়ী প্রয়োজন মনে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হতে পারে।'
সাধারণত সার্কুলারের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে এ ধরনের নির্দেশনা দিয়ে থাকে বিএফআইইউ। তবে বিএফআইইউ-প্রধান না থাকায় সার্কুলার জারি করা সম্ভব হয়নি।
গতকাল বুধবার সকালে স্বেচ্ছাচারিতা এবং অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করেন বিএফআইইউয়ের প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার ডেপুটির্নর এবং একজন উপদেষ্টা পদত্যাগ করেন।
এছাড়া আন্দোলনরতদের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার রাতের আঁধারে দেশ ছেড়েছেন বলে দাবি করা হয়।
বিএফআইইউয়ের আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, 'আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, অনেক দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ তাদের অ্যাকাউন্টে থাকা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন।
'আমরা সাধারণত কর্তৃপক্ষ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরামর্শ ছাড়া কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারি না। তবে এটি যথাসম্ভব ঠেকাতেই ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।'
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, 'ক্ষমতাচ্যুত সরকারের গুডবুকে থাকা অনেক ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালীরা অন্যায়-অনিয়ম করলেও আমরা চাইলেও অনেক পদক্ষেপ নিতে পারিনি।
'নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আমাদের কাছে অর্থপাচার নিয়ে অনেক তথ্যই জানতে চাইবে—এটাই স্বাভাবিক। আমরাও সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।'