শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার রক্ষা করছে না: মির্জা ফখরুল
শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার রক্ষা করছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছে। সেখান থেকে তিনি বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে নস্যাৎ করবার বিভিন্ন চক্রান্ত শুরু করেছেন।
'হাসিনাকে এভাবে আশ্রয় দিয়ে ভারত তার যে কমিটমেন্ট টু ডেমোক্রেসি, এটা তারা রক্ষা করেছে বলে আমার মনে হয় না। ভারতের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে, আপনারা তাকে আইনানুগভাবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে কাছে তু্লে দেন, এবং দেশের মানুষ তার বিচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই বিচারের সম্মুখীন তাকে হতে দিন।'
আজ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'এদেশের মানুষ শেখ হাসিনার যেসব অপরাধ– তা খাটো করে দেখে না। তারা মনে করে যে, গত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার এই ফ্যাসিবাদী শাসন– বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে দুর্বল করে দিয়েছে, জাতিকে আহত করেছে।'
'আপনারা দেখেছেন, তার শাসনামলে এই জাতিকে সে ১৮ লাখ কোটি টাকার ঋণে আবদ্ধ করে গেছে… পাচার হয়ে গেছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার। সেই জাতিকে সমস্ত দুঃশাসন দিয়েছে, সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে দিয়েছে'- যোগ করেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা নির্বাচন নিয়ে আমাদের বক্তব্য আগেও বলেছি, এখনো বলছি যে, এই গণঅভ্যুত্থানের পর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে। তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে, এই অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করে জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া।
'তবে আমি যেটা মনে করি, যে জঞ্জাল আওয়ামী লীগ সরকার সৃষ্টি করে গেছে– সেটাকে দূর করতে অবশ্যই কিছু সময় দরকার….একটি সঠিক সুন্দর নির্বাচন করার জন্য হলেও, কিছুটা সময়ের দরকার। যে সময়ে নির্বাচনকালীন নতুন সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করতে পারবে, সংস্কারগুলো করতে পারবে– সেই সময় অবশ্যই এদেশের মানুষ তাদেরকে দেবে।'
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ১১ দিনে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তারও ভূয়সী প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব।
দলের স্থায়ী কমিটির নিয়োগকৃত দুই নতুন সদস্য– অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনকে নিয়ে বেলা সাড়ে ১২টায় বিএনপি মহাসচিব শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন, এবং বিশেষ মোনাজাত করেন মির্জা ফখরুল।
এ সময়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, শামীমুর রহমান শামীম, যুবদলের মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়নসহ সহস্রাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।