স্থগিত হয়ে যাওয়া সিরিজ খেলার চেষ্টায় বিসিবি
করোনাভাইরাসের ধাক্কায় থমকে গিয়েছিল পুরো পৃথিবী। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ। খেলার মাঠগুলো বিরাণভূমি হয়ে পড়ে ছিল দীর্ঘদিন। একে একে স্থগিত হয়ে যায় সব ধরনের খেলাধুলা। অলিম্পিক গেমস, ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ, কোপা আমেরিকার মতো বড় বড় আসর পিছিয়ে গেছে এক বছর।
ফুটবলসহ অন্যান্য খেলার মতো করোনার প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটেও। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপসহ অনেকগুলো টুর্নামেন্ট-সিরিজ স্থগিত হয়ে গেছে। শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেট দলেরই চারটি সিরিজ স্থগিত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে মাঠে ফিরতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কা সফরের পর স্থগিত হওয়া বাকি সিরিজগুলো খেলার চেষ্টা চালাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অবশ্য স্থগিত হওয়া সিরিজগুলো সুবিধামতো কোনো সময়ে খেলতে ইতোমধ্যেই যোগাযোগ শুরু করেছে বিসিবি। দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী মঙ্গলবার এমনই জানিয়েছেন।
জুনের শেষ দিক থেকে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের অচলাবস্থা ভাঙতে শুরু করে। বুন্দেসলিগা দিয়ে মাঠে ফেরে ক্লাব ফুটবল। এরপর একে একে বাকি শীর্ষ লিগগুলো শুরু হয়। জুলাইতে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট সিরিজ দিয়ে মাঠে ফেরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। এরপর আরও কয়েকটি সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সব ধরনের খেলাধুলা মাঠে ফিরতে শুরু করায় স্থগিত হওয়া সিরিজগুলোর দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছে বিসিবি। ইতোমধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি সিরিজ নিশ্চিতও হয়েছে বাংলাদেশের। যদিও এটা স্থগিত হওয়া সিরিজ নয়।
নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট যে চারটা সিরিজের কথা বলেছে, তার মধ্যে একটা আমাদের সিরিজ। আমাদের সফর রয়েছে নিউজিল্যান্ডে। এটা সামনের বছর ফেব্রুয়ারির দিকে হবে, সেভাবেই পরিকল্পনা রয়েছে।'
এর আগে আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ স্থগিত হয় বাংলাদেশের। এ ছাড়া পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি টেস্ট ও একটি ওয়ানডে খেলা বাকি বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কা সিরিজ বাদে বাকি সিরিজগুলো কোন সময়ে করলে আইসিসির অন্যান্য সূচির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বোর্ডের সঙ্গে কথা বলছে বিসিবি।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী বলেন, 'আমাদের চারটা সিরিজ স্থগিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। এর বাইরে একটি টেস্ট বাকি ছিল, যেটা পাকিস্তানের সাথে। যেহেতু মাত্র একটি টেস্ট, সেহেতু আমাদের অল্প সময়ের একটা উইন্ডো দরকার হবে। এটা আমরা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সাথে আলোচনা করে ঠিক করব আশা রাখি।'
'এ ছাড়া নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সাথেও আমাদের একটা বোঝাপড়া হয়েছে যে, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা সিরিজটি নিশ্চিত করব। শ্রীলঙ্কার সাথে সিরিজটি তো চূড়ান্তই। এর বাইরে অস্ট্রেলিয়া ও আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সাথেও আমাদের আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরা চেষ্টা করব অস্ট্রেলিয়া সিরিজটি সুবিধাজনক সময়ে করার।' যোগ করেন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।
এসব সিরিজ খেলার পথে স্বাভাবিকভাবেই বিপক্ষ দলের সুবিধা-অসুবিধার ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হচ্ছে বিসিবির। তবে আইসিসির দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সিরিজ খেলার বাধ্যবাধকতা থাকায় জটিলতাও থাকছে।
নিজাম উদ্দিন চৌধুরী আরও বলেন, 'আমরা ফাঁকা থাকলেই হবে না, অস্ট্রেলিয়ার মতো একটা বড় দলের ফাঁকা সময়েরও ব্যাপার আছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সিরিজ নিশ্চিত করতে হবে। আইসিসির যে নির্ধারিত সময়সীমা আছে, এর মধ্যেই করতে হবে।'
'এ ছাড়া আয়ারল্যান্ডে ওয়ানডে প্রতিযোগিতার খেলা, সে ক্ষেত্রে আইসিসির সময়সীমা বর্ধিত করার একটা পরিকল্পনা রয়েছে ইতোমধ্যে। সেই বর্ধিত সময়সীমার মধ্যেই আমরা আশা করছি যে হয়তো শেষ করতে পারব।' যোগ করেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী।