প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি
প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস প্রচলনসহ বিশ্বমানের প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে ৮টি সুপারিশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি এর সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী।
আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, "পৃথিবীর উন্নত দেশসমূহে ৮ হতে ১২ বছরের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ চালু রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে যেভাবে দ্রুত জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার ঘটছে, তাতে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় কমপক্ষে ৮ বছর মেয়াদের একটি বাস্তবমুখী, পরিবেশভিত্তিক শিক্ষাক্রম চালু করতে না পারলে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব হবে না।"
তিনি বলেন, যেহেতু ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ৮ বছর মেয়াদী প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চলমান, সেহেতু শিক্ষক নির্বাচনে কোনো প্রকার শিথিলতা বা দুর্বলতাকে প্রশ্রয় দেওয়া মোটেই বাঞ্চনীয় হবে না। কারণ মানসম্মত শিক্ষকই মানসম্মত শিক্ষা উপহার দিতে পারেন।
উন্নত বিশ্বের অনেক দেশে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা নেই এমন ব্যক্তি কখনো শিক্ষা বিভাগীয় কর্মকর্তা হতে পারেন না। কারণ শিক্ষায় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ওই শিক্ষকরাই পরবর্তী পর্যায়ে শিক্ষা বিভাগীয় কর্মকর্তা হিসেবে সফলভাবে প্রশাসন, ব্যবস্থাপনা, পরিদর্শন, তত্ত্বাবধান, মনিটরিং এবং যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাতে সক্ষম বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, "বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিজস্ব ক্যাডার রয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব কোনো ক্যাডার সার্ভিস না থাকায় বিশাল জনবলের জন্য অন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে কর্মকর্তা নিয়োগ করা হচ্ছে। এতে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ, অভিজ্ঞ, মাঠ পর্যায়ের সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল জনবল প্রাপ্তি সম্ভব হয়ে উঠছে না।।"
তাদের অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে আছে- সহকারি শিক্ষক পদ ব্যতিরেকে উপরের সকল পদে নিয়োগ বন্ধ রেখে শুধুমাত্র সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে মেধা, যোগ্যতা যাচাই সাপেক্ষে বিভাগীয় উচ্চপদে শত ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে মহাপরিচালক পদ পর্যন্ত নিয়োগদানের ব্যবস্থা করা; জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের গেজেট, পরিপত্র, দেশের প্রচলিত বিধিবিধানের আলোকে বেসরকারি চাকরিকালের ৫০ ভাগ ধরে জ্যেষ্ঠতা, পদোন্নতি, উত্তোলিত টাইম স্কেল, গেজেটে বাদ পড়া প্রধান শিক্ষকদের গেজেটভুক্ত করার ব্যবস্থা করা।
এছাড়াও, বর্তমানে কর্মরত শিক্ষকদের জন্য যোগ্যতাভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন স্কেল প্রদান; কারিকুলাম ও পাঠ্যসূচির আওতায় ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত সারাদেশে একীভূত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা; প্রতিটি বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও পাঠদানের উপকরণ সামগ্রী সরবরাহ করা; বিদ্যালয়ের কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একজন অফিস সহকারী নিয়োগের ব্যবস্থা করা এবং আই.এল.ও এবং ইউনেস্কো সনদ অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কিত সকল কমিটিতে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষক প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করার সুপারিশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খোন্দকার, সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ আলী আক্কাছ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম প্রমুখ।