পদ্মা ব্যাংক থেকে টাকা বের করতে যেভাবে জটিল জাল বিছিয়েছিলেন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত
পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ব্যাংকটি থেকে ২৪৫ কোটি টাকা স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (এসইএমএল) নামক একটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে সরিয়ে নেন। এ কোম্পানির মালিক তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ।
তবে তিনি এখানেই থেমে থাকেননি। ওই টাকা এসইএমএল থেকে একটি নতুন নন-ব্যাংক ফাইন্যান্স কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন, যেখানে তার স্ত্রী এবং ছেলে রাহিব সাফওয়ান সরাফাত চৌধুরী দুজনেই শেয়ারহোল্ডার।
স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড (এসএফআইএল) নামক এ নতুন নন-ব্যাংক ফাইন্যান্স কোম্পানিটি নাফিজ প্রতিষ্ঠা করেন ২০২০ সালে। এ সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় অবস্থিত দুটি বিদেশি সংস্থাকে এটির শেয়ারহোল্ডার হিসেবে মিথ্যা দাবি করেন।
এসএফআইএল-এর তালিকায় কানাডিয়ান ম্যাপল স্ট্র্যাটেজিক ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট এলপি এবং যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক স্ট্যাটিস্টিকার ইনক নামক দুটি কোম্পানির ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং ৫০% শেয়ার রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে, অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এ দুটি কোম্পানিই কাল্পনিক।
এসএফআইএল-এর ২০২১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, উভয় বিদেশি কোম্পানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশনে নিবন্ধিত।
তবে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কানাডিয়ান এবং মার্কিন এক্সচেঞ্জে এমন কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত নেই। এছাড়া এসব বিদেশি বিনিয়োগকারী কোম্পানির প্রতিনিধিরা নাফিজের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেও বেরিয়ে এসেছে।
ওভারল্যাপিং শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে আন্তঃসংযুক্ত কোম্পানির একটি জাল তৈরি করেছিলেন নাফিজ। এসএফআইএল-এর কয়েকজন পরিচালক নাফিজের প্রতিষ্ঠিত কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধি ছিলেন।
২০০১ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অগ্রাধিকার ব্যাংকিং প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা নাফিজ ২০০৯ সালে লাইসেন্স পাওয়া পদ্মা ব্যাংকের (পূর্বে ফারমার্স ব্যাংক নামে পরিচিত) একজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হন।
এরপর থেকে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়কালে নাফিজ একজন বিজনেস টাইকুন হিসেবে আবির্ভূত হন। জানা যাক, তার এ উত্থানের গল্প...
যেভাবে পদ্মা ব্যাংকে প্রবেশ নাফিজের
২০১৩ সালে পদ্মা ব্যাংকের যাত্রা শুরুর পর নাফিজ ব্যাংকটির স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হন। তিনি তার সম্পদ ব্যবস্থাপনা ফার্ম রেস পরিচালিত ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন।
পদ্মা ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার জন্য জমা দেওয়া তার জীবনীতে নাফিজ রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ২৪.২৫% মালিকানার কথা উল্লেখ করেন। টিবিএস এ সম্পর্কিত কিছু নথিপত্র দেখেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো এবং টিবিএস-এর হাতে আসা একটি চিঠি অনুসারে, নাফিজ ২০১৫ সালে পদ্মা ব্যাংকের বোর্ডে যোগ দেন এবং অডিট কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।
এরপর নাফিজ রেসসহ তার বিভিন্ন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে বিনিয়োগের আড়ালে পদ্মা ব্যাংক থেকে তহবিল সরানো শুরু করেন। এসব বিনিয়োগ পদ্মা ব্যাংকের জন্য উল্লেখযোগ্য রিটার্ন আনতে পারেনি, ফলে ব্যাংকটিতে গুরুতর তারল্য সংকট দেখা দেয়, যা শেষ পর্যন্ত ব্যাংকের পতনের কারণ হয়।
২০১৭ সাল নাগাদ দুর্বল বিনিয়োগ এবং ঋণ দুর্নীতির কারণে পদ্মা ব্যাংক আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়। ব্যাংকটি না তার বিনিয়োগকৃত তহবিল ফিরে পেয়েছিল, না এসব বিনিয়োগ থেকে কোনো রিটার্ন আদায় করতে পেরেছিল।
পরে, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে নাফিজ ছাড়া ১৯ জন প্রতিষ্ঠাতা পরিচালককে অপসারণ করে ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করে। ঋণ দুর্নীতি এবং তহবিল অব্যবস্থাপনার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও গভর্নর ফজলে কবিরের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ব্যাংক নাফিজকে পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করেছিল।
এভাবেই কোনো ব্যক্তিগত অর্থ বিনিয়োগ না করেই নাফিজ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
'ব্যাংকের পর্ষদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুপারিশ অনুযায়ী আমাকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে,' দ্য ডেইলি স্টার ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি নাফিজকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
তিনি আরও বলেন, 'আমি ১২টি প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিনিধি হিসেবে ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করব।'
চেয়ারম্যান হওয়ার পরপরই তিনি ব্যাংকের নাম ফারমার্স ব্যাংক থেকে পরিবর্তন করে পদ্মা ব্যাংক রাখেন।
ফারমার্স ব্যাংক মূলত কৃষকদের আর্থিক সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে লাইসেন্স পেয়েছিল, তবে নাম পরিবর্তনের পর এটি এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়।
এর পরেই রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে পূর্ববর্তী ফারমার্স ব্যাংককে বেলআউট হিসেবে ৭১৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে বাধ্য করা হয়।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো 'চাপের মুখে' ব্যাংকটিতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত বিনিয়োগ করে, যা সাবঅর্ডিনেট বন্ড এবং স্থায়ী আমানতসহ অন্যান্য আকারে আসে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর থেকে বিনিয়োগ পাওয়ার পর নাফিজ পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে ওয়েস্টিন হোটেলে সব বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে গণমাধ্যমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
ওই বৈঠকে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় নিজেকে তিনি নাফিজের চাচাতো ভাই হিসেবে পরিচয় দেন।
তবে জনগণের অর্থের এ বিনিয়োগ ব্যাংকটির পুঁজিক্ষয় ঠেকাতে পারেনি। দুর্নীতিও অব্যাহত থাকে।
নাফিজের চেয়ারম্যান থাকাকালীন ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পদ্মা ব্যাংক একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, এটি মার্কিন-ভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক ডেলমরগান অ্যান্ড কোম্পানির সঙ্গে ৭০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের জন্য একটি চুক্তি করেছে। এর মধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার ইক্যুইটি এবং ৩৫০ মিলিয়ন ডলার ক্রেডিট সুবিধা রয়েছে।
বিদেশি তহবিল পাওয়ার অজুহাতে ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতিতে ৯০০ কোটি টাকার বেশি পুঞ্জীভূত লোকসান গোপন করে ব্যালেন্স শীট পুনর্গঠন করে। ব্যাংকটি নিজের আর্থিক অবস্থা গোপন করতে ওয়েবসাইট থেকে পূর্ববর্তী বার্ষিক প্রতিবেদনও সরিয়ে ফেলে।
এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক পদ্মা ব্যাংকের জন্য নগদ স্থিতি অনুপাত (সিআরআর) এবং সাচুটরি লিকুইডিটি রেশিও (এসএলআর) বজায় রাখার প্রবিধান শিথিল করে।
তবে, প্রতিশ্রুত সে তহবিল কখনোই বাস্তবায়িত হয়নি এবং বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার ঘোষণা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়।
নাফিজ ছয় বছর পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে তিনি কোনো নতুন বিনিয়োগ আনতে পারেননি বা ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার কোনো উন্নতি ঘটাতে পারেননি। ইতোমধ্যে তিনি আরেকটি ফাইন্যান্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে পদ্মা ব্যাংক থেকে পদত্যাগ করেন।
তার পদত্যাগের পরপরই ব্যাংকটি আরেকটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার ঘোষণা দেয়।
নাফিজ যেভাবে পদ্মা ব্যাংককে তার স্ত্রীর কোম্পানিতে বিনিয়োগে ব্যবহার করেছিলেন
২০১৫ এবং ২০১৬ সালে পদ্মা ব্যাংক ৩টি নতুন প্রতিষ্ঠিত মিউচুয়াল ফান্ডে ১৪৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে: ফার্স্ট অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডে ১০০ কোটি টাকা, স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট শরিয়াহ ফান্ডে ২৫ কোটি টাকা, এবং স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডে ২০ কোটি টাকা।
এ স্পেশাল পারপাস ভেহিকল অ্যান্ড অলটারনেটিভ ফান্ডে বিনিয়োগের সময় নাফিজ ব্যাংকের অডিট কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।
রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ (আরজেএসি) অনুসারে, আঞ্জুমান আরা শহীদের মালিকানাধীন স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (এসইএমএল) এসব তহবিল পরিচালনা করত।
পদ্মা ব্যাংকের নথি অনুযায়ী, আঞ্জুমান আরা শহীদ ব্যাংকের একজন স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার ছিলেন এবং ব্যাংকে তার ২০ লাখ শেয়ার রয়েছে।
বর্তমানে, এসইএমএল নতুন ফাইন্যান্স কোম্পানি স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড (এসএফআইএল)-এ ৬% শেয়ার ধারণ করে। এসইএমএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এহসানুল কবির এসএফআইএল-এর জন্য মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
আঞ্জুমান আরা শহীদ এসইএমএল-এর সঙ্গে তার সম্পর্ক লুকাতে একাধিক স্তরের গোপনীয়তা ব্যবহার করেছেন।
যেমন, ডাক ও টেলিকম মন্ত্রণালয়ের টেলিকম বিভাগের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অবসরপ্রাপ্ত আমলা মশিউর রহমান বর্তমানে স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান। রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অনুযায়ী, আঞ্জুমান আরা শহীদের মালিকানাধীন সফটহরাইজন কোম্পানির পরিচালক হিসেবেও তিনি নিযুক্ত আছেন।
মশিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসইএমএল-এর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই এবং তিনি শুধুমাত্র নাফিজের কোম্পানি সিডিনেট কমিউনিকেশনের একজন কর্মচারী। সিডিনেট কমিউনিকেশনের সিইও হিসেবে কাজ করছেন মশিউর, যেখানে নাফিজের প্রধান শেয়ার রয়েছে। তিনি জানান, নাফিজ এসএফআইএল-এর সঙ্গেও জড়িত, যা সিডিনেটের শেয়ারহোল্ডার।
'আমাকে সফটহরাইজনের মনোনীত পরিচালক এবং এসইএমএল-এর মনোনীত চেয়ারম্যান করা হয়েছিল, তবে আমি এ সংস্থাগুলো সম্পর্কে কিছুই জানি না,' মশিউর টিবিএসকে জানান।
তিনি আরও বলেন, 'এমনকি আমাকে এসইএমএল-এর চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়নি। হঠাৎ করেই জানতে পারলাম আমি এ কোম্পানির চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছি। নাফিজ ও তার স্ত্রী মাঝে মাঝে এ ধরনের মনোনীত পরিচালনার বিষয়ে আমাকে জানাতেন, এবং কোনো আপত্তি না থাকলে আমি রাজি হতাম।'
সিডিনেটে যোগদানের আগে, মশিউর ২৫ জুন ২০২২ পর্যন্ত চার বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি)-তে কাজ করেছিলেন। অবসর নেওয়ার পর তিনি ২০২২-এর ২৫ আগস্ট সিডিনেটে যোগ দেন।
'নাফিজ আমাকে বেছে নিয়েছিলেন কারণ আমার সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসি-তে কাজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে,' মশিউর বলেন।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সরকার সামিট কমিউনিকেশনস, সিডিনেট কমিউনিকেশনস, এবং মেটাকোর সাবকম লিমিটেডকে বেসরকারি খাতে তিনটি সাবমেরিন কেবল লাইসেন্স প্রদান করে।
এর আগে ২০২১ সালে পদ্মা ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এম কে আলমগীর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) অভিযোগ করেছিলেন, তার উত্তরসূরি নাফিজ সরাফাত তার অন্য কোম্পানি এসইএমএল-এর মাধ্যমে ফার্স্ট অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডে ব্যাংকের ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, যা স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি করে।
ঋণ দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাংকটি থেকে পদত্যাগ করা আলমগীর এ বিষয়ে তদন্তের দাবি করেন।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম ২০২১ সালের ১৩ মার্চ ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের একটি অনুষ্ঠানে পদ্মা ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এম কে আলমগীরের আনা অভিযোগের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেন, তহবিলের অপব্যবহারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তবে এ বিষয়ে তদন্তে কোনো অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি।
২০১৫ সালে পদ্মা ব্যাংক বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল নামক নতুন একটি ইনভেস্টমেন্ট ভেহিকলে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। এ বিনিয়োগের তহবিল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ছিল নাফিজের মালিকানাধীন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্টের ওপর।
বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল ফান্ডের ট্রাস্টি হিসেবে কাজ করেছিল নাফিজ এবং তার সহযোগীদের প্রতিষ্ঠিত সেন্টিনেল ট্রাস্টি অ্যান্ড কাস্টোডিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড। সেন্টিনেলের ওয়েবসাইটে প্রদত্ত ঠিকানা এবং রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ঠিকানা একই।
বিএসইসি প্রবিধান অনুসারে, তহবিল ব্যবস্থাপক এবং ট্রাস্টিকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পৃথক সত্তা হতে হবে।
পদ্মা ব্যাংকে তার মেয়াদকালে নিজের কোম্পানিতে বিনিয়োগের বিষয়ে নাফিজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যখন এ বিনিয়োগগুলো মুহিউদ্দীন খান আলমগীর (সাবেক চেয়ারম্যান) এবং বাবুল চিস্তি (সাবেক ইসি চেয়ারম্যান) অনুমোদন করেছিলেন, তখন আমি পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বা অডিট কমিটির চেয়ারম্যান ছিলাম না। এছাড়া, অডিট কমিটি বিনিয়োগ অনুমোদন করে না।'
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, 'স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট আমার স্ত্রীর মালিকানাধীন নয়।'
তিনি দাবি করেন, পদ্মা ব্যাংক ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ২০১৫-১৬ সালে করা বিনিয়োগ থেকে ৩৯.৫০ কোটি টাকা আয় করেছে। তবে তিনি কোনো সহায়ক নথি প্রদান না করায় টিবিএস তথ্যটি যাচাই করতে পারেনি।
নাফিজ লিখিত মন্তব্যে বলেন, 'যদিও আমি ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান নই, আপনার অনুরোধে আমি ব্যাংক থেকে এ তথ্য নিয়েছি।'
যেভাবে নতুন ফাইন্যান্স কোম্পানি গঠন করেন নাফিজ
যখন দেশের ২৯টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্ধেকেরও বেশি টিকে থাকার জন্য লড়াই করছিল, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালের মার্চে আরেকটি নতুন প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড (এসএফআইএল)-এর লাইসেন্স জারি করে। এ লাইসেন্সের ঘোষণায় বলা হয়েছিল, বিনিয়োগের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আসবে।
নাফিজ পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাকালে ঋণ দুর্নীতির কারণে ধসের মুখে থাকা ব্যাংকটি এ লাইসেন্স পায়।
২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, এসএফআইএল-এর শেয়ারহোল্ডিংয়ের ৯৬% প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ এবং ৪% শেয়ার দুই ব্যক্তির হাতে রয়েছে।
স্বতন্ত্র পরিচালকদের মধ্যে আছেন আঞ্জুমান আরা শহীদ এবং রাহিব সাফওয়ান সরাফত চৌধুরী, যারা যৌথভাবে ৪ কোটি টাকার ৪% শেয়ার ধারণ করেন।
আঞ্জুমান আরা শহীদ এসএফআইএল-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন, এবং বার্ষিক প্রতিবেদনে তাকে কানাডা-ভিত্তিক নারী উদ্যোক্তা ও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে নাফিজ ২০০৯ সালে পদ্মা ব্যাংকের স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হিসেবে জমা দেওয়া বায়োডাটায় তার স্ত্রীকে গৃহিণী হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
নাফিজ আরও উল্লেখ করেন, তিনি ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের রিলেশনশিপ ম্যানেজার ছিলেন এবং ২০০৮ সালে রেস ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান হন।
এসএফআইএল-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে তার স্ত্রী ও ছেলের পরিচালনা পদের উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও নাফিজ টিবিএসকে বলেন, 'আমি বা আমার পরিবারের কেউই এ এনবিএফআই-তে পরিচালকের পদে নেই। এসএফআইএল-এর পরিচালনা পর্ষদের তালিকা এখানে পাবেন: https://www.sfilbd.com/about-us/leaders/board-of-directors। আপনি এ তালিকা থেকে দেখতে পাচ্ছেন যে, এসএফআইএল-এর পরিচালকদের কেউই কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এ চাকরি করেন না এবং আমার পরিবারের কেউই এসএফআইএল-এর পরিচালক নন।'
টিবিএস মন্তব্যের জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এসএফআইএল কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে ২০২০ থেকে ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনগুলো সরিয়ে ফেলেন। পূর্বে হাইপারলিঙ্কের মাধ্যমে এগুলোতে প্রবেশ করা গেলেও, টিবিএস-এর জিজ্ঞাসার পর থেকে আর সেগুলো পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ২৬ আগস্ট ব্যাংকগুলোকে চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ এবং ছেলে রাহিব সাফওয়ান সারাফতের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার নির্দেশ দেয়। বিএফআইইউ তাদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের অধীনে পরিচালিত সব ধরনের লেনদেন স্থগিত করতে বলে। সংস্থাটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ধারা ২৩-এর অধীনে ৩০ দিনের জন্য স্থগিতের নির্দেশ জারি করে।
চৌধুরী নাফিজ সরাফাত দেশের সবচেয়ে বড় ফান্ড ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্ট পিসিএল-এর চেয়ারম্যানও।
যেভাবে তিনি ভুয়া দাবির মাধ্যমে এসএফআইএল-এর লাইসেন্স নেন
যদিও এসএফআইএল এটির বার্ষিক প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে, ৫০ কোটি টাকার ৫০% বিনিয়োগ স্ট্যাটিস্টিকার ইনক এবং কানাডিয়ান ম্যাপল স্ট্র্যাটেজিক ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট এলপি নামে মার্কিন ও কানাডাভিত্তিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এসেছে, উভয় প্রতিষ্ঠানই জাল বলে প্রমাণিত হয়েছে।
অন্যদিকে, এসএফআইএল-এর কানাডাভিত্তিক কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে নাফিজ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
আরেক বিনিয়োগকারী স্ট্যাটিস্টিকার — যেটিকে এসএফআইএল দাবি করেছে মার্কিনভিত্তিক একটি কোম্পানি — সেখানে একজন বাংলাদেশি অবসরপ্রাপ্ত আমলা প্রতিনিধিত্ব করছেন।
কানাডিয়ান ম্যাপল স্ট্র্যাটেজিক ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট
এসএফআইএল-এর ৪৮ কোটি টাকার ৪৮% শেয়ার কানাডিয়ান ম্যাপল স্ট্র্যাটেজিক ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট এবং ২ কোটি টাকার ২% শেয়ার যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক স্ট্যাটিস্টিকার ইনক-এর অধীনে রয়েছে।
২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে কানাডিয়ান ম্যাপল স্ট্র্যাটেজিক ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টকে টরন্টো-ভিত্তিক অন্টারিও সিকিউরিটিজ কমিশনের তালিকাভুক্ত একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ফান্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
তবে টিবিএস অন্টারিও সিকিউরিটিজ কমিশনের কাছে এ নামে কোনো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান খুঁজে পায়নি। কানাডিয়ান ম্যাপল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ইনক নামক আরেকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার লোগো এসএফআইএল-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে ব্যবহার করা কানাডিয়ান ম্যাপল স্ট্র্যাটেজিক ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের লোগোর সঙ্গে মিল রয়েছে।
টিবিএস-এর পক্ষ থেকে ইমেলের মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করা হলে কানাডিয়ান ম্যাপল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করেছে, কানাডিয়ান ম্যাপল স্ট্র্যাটেজিক ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
টিবিএস-এর তদন্তে আরও জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি কোথাও নিবন্ধিত নয়। ম্যাপল ওয়েবসাইটের ফোন নম্বরটি এসএফআইএল-এর আঞ্জুমান আরা শহীদ (৪১৬৭৫৫৯১৩২)-এর নামে পাওয়া গেছে।
বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রফেসর উইলিয়াম এইচ ডেরেঙ্গারকে কানাডিয়ান ম্যাপল স্ট্র্যাটেজিক ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের মনোনীত পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চ্যান্সেলর।
কানাডিয়ান ম্যাপলের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে ডেরেঙ্গার বলেন, 'আমি শুরু থেকেই আমাদের কানাডিয়ান শেয়ারহোল্ডারদের প্রতিনিধিত্বকারী একজন স্বাধীন পরিচালক ছিলাম। আমি শুরু থেকেই নিষ্ক্রিয় ছিলাম; আনুষ্ঠানিক সময় ছাড়া বোর্ডের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আমার খুব একটা যোগাযোগ হয়নি।'
ডেরেঙ্গার আরও দাবি করেন, যেসব বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন, তাদের কাছ থেকে কোনো বিনিয়োগ না আসায় তিনি শুরু থেকেই নিষ্ক্রিয় ছিলেন।
কানাডিয়ান ম্যাপল স্ট্র্যাটেজিক ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের আরেক মনোনীত পরিচালক মো. শাহরুখ আদনান খান। তাকে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্কুল অফ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও ভারপ্রাপ্ত ডিন এবং ইইই বিভাগের প্রধান এবং ইনোভেশন অ্যান্ড কমার্শিয়ালাইজেশন সেন্টারের পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্ট্যাটিস্টিকার ইনক
বার্ষিক প্রতিবেদনে আরেকটি বিদেশি বিনিয়োগকারীকে ইউএস এসইসি-তে তালিকাভুক্ত মার্কিনভিত্তিক লাইসেন্সপ্রাপ্ত তহবিল ব্যবস্থাপক হিসাবে পরিচয় করানো হয়েছে।
তবে টিবিএস-এর তদন্তে ইউএস এসইসি-তে এ নামে কোনো নিবন্ধিত ফার্ম পাওয়া যায়নি। মার্কিন দূতাবাসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরীক্ষা করা হলে দেখা গেছে, এটি একজন বাংলাদেশি ব্যক্তির দ্বারা নিবন্ধিত এবং বর্তমানে এটি চালু নেই।
এসএফআইএল-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে অবসরপ্রাপ্ত আমলা জাহিদ হোসেনকে স্ট্যাটিস্টিকার ইনকের মনোনীত পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে তাকে বিনিয়োগ বোর্ডের প্রাক্তন নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসাবে পরিচয় করানো হয়েছিল, তবে টিবিএস বিনিয়োগ বোর্ডে (বিওআই; পরে বিডা) এ নামে কোনো নির্বাহী চেয়ারম্যান খুঁজে পায়নি।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে এসএফআইএল-এর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকার কথা দাবি করে নাফিজ বলেন, 'আমি এসএফআইএল ফাইন্যান্স পিএলসি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জিজ্ঞাসা করেছি এবং জানতে পেরেছি যে, এ দুটি বিদেশি কোম্পানি বৈধ এবং বিদেশি এখতিয়ারের অধীনে পরিচালিত হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'অস্তিত্ব ও ক্যাপিটাল কনট্রিবিউশন যাচাই করার পরে বাংলাদেশ ব্যাংক এসব এনবিএফআইকে [নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান] লাইসেন্স দিয়েছে।' তিনি দাবি করেন, উভয় কোম্পানির বিনিয়োগ যথাযথ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এসেছে।
কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত এসএফআইএল-এর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা
অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স এবং পদ্মা ব্যাংকের ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজ উভয়ের ২০ কোটি টাকার ২০% শেয়ার রয়েছে।
স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্সের মনোনীত পরিচালক শাহনুল হাসান খান। ২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে তাকে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় করানো হয়েছিল।
২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে শরিফুল ইসলামকে স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্সের মনোনীত পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে তাকে রেস ম্যানেজমেন্টের প্রাক্তন কর্মচারী বলা হয়েছে।
মোহাম্মদ শরীয়ত উল্লাহ পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজের মনোনীত পরিচালক, যাকে টাস্ক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজ ও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের আইটি প্রধান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজ বর্তমানে এসএফআইএল-এর ২০ কোটি টাকার ২০% শেয়ার ধারণ করে।
এসএফআইএল-এর অফিসও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ক্যাম্পাসে অবস্থিত।