চার্লি চ্যাপলিন ও ক্লিন্ট ইস্টউডের ছবি থেকে কপি ‘শোলে’! জাভেদ আখতারকে বলেছিলেন নাসিরুদ্দিন
নাসিরুদ্দিন শাহ বলেছেন, একবার চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতারের সঙ্গে মৌলিকত্বের সংজ্ঞা নিয়ে আলোচনা করার সময় তিনি জাভেদের লেখা ক্লাসিক সিনেমা 'শোলে'-কে (১৯৭৫) চার্লি চ্যাপলিন ও হলিউড তারকা ক্লিন্ট ইস্টউডের কাজের অনুকরণ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
সেলিম খান ও জাভেদ আখতারের লেখা 'শোলে'কে সর্বকালের অন্যতম সেরা ও প্রভাবশালী ভারতীয় চলচ্চিত্র মনে করা হয়।
শনিবার আইএফপি (ইন্ডিয়া ফিল্ম প্রজেক্ট) সিজন ১৪-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাসিরুদ্দিন শাহ বলেন, 'আমার মনে আছে, জাভেদ আখতার একবার আমাকে বলেছিলেন, "একটা জিনিস তখনই মৌলিক হয়, যখন তার উৎস খুঁজে পাওয়া যায় না।" আমি তার সাথে শোলে নিয়ে কথা বলছিলাম। বলেছিলাম, "আপনি প্রতিটি দৃশ্য নকল করেছেন—চার্লি চ্যাপলিনের কোনো ছবি বাদ দেননি, প্রতিটি ফ্রেমে ক্লিন্ট ইস্টউডের উপস্থিতিও টের পাওয়া যায়।"
'কিন্তু তিনি বললেন, "তুমি রেফারেন্স কোত্থেকে নিয়েছ, প্রশ্ন সেটা নয়—বরং তা কতটুকু বিকশিত করতে পেরেছ সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন।" মৌলিকত্বের সংজ্ঞা দেওয়া কঠিন। মহান নাট্যকার উইলিয়াম শেকস্পিয়ারও তার কাজে প্রাচীন নাটক থেকে বিভিন্ন উপাদান নিয়েছেন। তবে তিনি সেগুলো যেভাবে উপস্থাপন করেছিলেন, তাতেই মৌলিকত্ব ছিল।'
রমেশ সিপ্পি পরিচালিত 'শোলে'র গল্প আবর্তিত হয়েছে ডাকাতিকে কেন্দ্র করে। স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্নের অনেক উপাদানের মিশ্রণ রয়েছে এ ছবিতে। এ ধারার চলচ্চিত্র জনপ্রিয় হয়েছে ক্লিন্ট ইস্টউড ও সামুরাই সিনেমার হাত ধরে।
১৯৭০-এর দশকের একদল তারকা অভিনেতা কাজ করেন 'শোলে'তে। এ দলে ছিলেন ধর্মেন্দ্র, অমিতাভ বচ্চন, সঞ্জীব কুমার, হেমা মালিনী, জয়া ভাদুড়ি ও আমজাদ খান।
'নিশান্ত', 'জানে ভি দো ইয়ারো', 'মির্চ মাসালা'-র মতো সমান্তরাল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করে নিয়েছেন নাসিরুদ্দিন শাহ। তবে 'হিরো হিরালাল', 'বিশ্বাত্মা', 'মোহরা'-র মতো বাণিজ্যিক ধারার সিনেমাতেও তিনি সমান সফল।
আইএফপিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরিচালক মৃণাল সেন, বাসু চ্যাটার্জী, সত্যজিৎ রায়, অনুরাগ কাশ্যপ ও বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের প্রশংসা করেন তিনি।
নাসিরুদ্দিন শাহ বলেন, 'মৃণাল সেন, বাসু চ্যাটার্জী, মিস্টার রে-এর সিনেমাগুলো তখন নতুনত্ব নিয়ে এসেছিল। 'ভুবন সোম', 'সারা আকাশ' বা 'অঙ্কুর'-এর মতো সিনেমাগুলো দারুণ সাড়া পেয়েছিল। তবে সে সময় এ ধরনের সিনেমা খুব বেশি তৈরি হতো না।'
আইএফপিতে নাসিরুদ্দিন শাহ পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র 'ম্যান ওম্যান ম্যন ওম্যান' প্রদর্শিত হয়েছে। দুই প্রজন্মের প্রেম ও সঙ্গ নিয়ে এর গল্প গড়ে উঠেছে।
নাসিরুদ্দিন শাহর সর্বশেষ কাজের মধ্যে আছে ওয়েব সিরিজ 'আইসি ৮১৪: দ্য কান্দাহার হাইজ্যাক' এবং 'কুত্তে' ও 'গেহরাইয়ান' সিনেমা। তিনি এখন ক্যামিও চরিত্রে অভিনয় করতে পছন্দ করেন।