সৌদি তেলক্ষেত্রে হামলার ঘটনায় ঊর্ধ্বমুখী তেলের বাজার
সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় তেল পরিশোধনাগারে হামলায় ঘটনায় সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে গেছে প্রায় ১০ শতাংশ। তবে এ ঘটনার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হতে যাচ্ছে তা তেল উৎপাদন কত দিন বিঘ্নিত থাকবে ও হামলার ভবিষ্যত প্রভাব কী হবে তার ওপর নির্ভর করছে।
নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে মার্কিন অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৫.৬১ ডলার বা ১০.২ শতাংশ বেড়ে ৬০.৪৬ ডলারে উন্নীত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের ব্রেন্ট অশোধিত তেল ব্যারেল প্রতি ৭.৮৪ ডলার বা ১৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৬৮.০৬ ডলার।
সৌদি কোম্পানি আরামকোর পরিশোধনাগারে হামলার দায় স্বীকার করেছে ইরানের মদদ পাওয়া ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এ ঘটনায় প্রতিদিন ৫৭ লাখ ব্যারেল অশোধিত তেল উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে, যা সৌদি আরবের প্রতিদিনের বৈশ্বিক রপ্তানির অর্ধেকের বেশি ও বিশ্বব্যাপী দৈনিক অশোধিত তেল উৎপাদনের ৫ শতাংশের অধিক। এ উৎপাদনের বেশির ভাগই যায় এশিয়ায়।
ব্যবস্থা-বাণিজ্যের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কর্নারস্টোন ম্যাক্রোর বিশ্লষক জোনাথন অ্যারোসন বলেন, ‘সৌদি তেল উৎপাদন ৫০ শতাংশ নেমে যাওয়া এক প্রচণ্ড ধাক্কা।’
হুতির এ হামলা বিশ্বের তেলের মজুদের স্থিতিশীলতায় উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। ‘বিশ্বে তেলের খুব নির্ভরযোগ্য এক সরবরাহকারী সৌদি আরব,’ বলেন আইএইচএস মার্কিটের অশোধিত তেল গবেষণার প্রধান জিম বার্কহার্ড।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত আবকোয়াইক প্লান্টে পুনরায় উৎপাদন শুরুর কাজ চলছে। রবিবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সংবাদে বলা হয়, সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে সোমবার এক-তৃর্তীয়াংশ উৎপাদন পুনরায় চালু হবে। তবে পুরো প্লান্ট চালু করতে হয়তো কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেলক্ষেত্রে হামলায় ইরানকে দায়ী করে বলেছেন, দেশটির ওপর সামরিক হামলার সম্ভাবনা ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। এদিকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে জ্বালানির ভালো সরবরাহ বজায় রাখা নিশ্চিত করতে আমাদের অংশীদার ও মিত্র দেশগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইরান এ হামলার জন্য দায়ী।’
তবে ইরান তাদের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে।
এ বছরের গোড়ার দিকে বিভিন্ন তেল ট্যাঙ্কারে একের পর এক হামলার পর এ ধরনের খবর মধ্যপ্রাচ্যে ফের সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাকে ক্রমেই জোরালো করছে।