সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতলেন মাহমুদউল্লাহরা
বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও দেখা গেল পেসারদের দাপট। স্পিনারদের ঘূর্ণিতেও দিক হারালেন ব্যাটসম্যানরা। তাতে তামিম একাদশের স্কোর থেকে যায় একেবারে হাতের নাগালেই। যদিও হাতের নাগালের স্কোর ছুঁতেও কম বেগ পোহাতে হয়নি মাহমুদউল্লাহ একাদশকে। শেষ পর্যন্ত তারা ম্যাচটি জিতেছে ৫ উইকেটে।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে তামিম একাদশ। ম্যাচ সেরা রুবেল হোসেন ও ম্যাচের সেরা বোলার সুমন খানের বোলিং তোপে ২৩.১ ওভারে ১০৩ রানেই অলআউট হয়ে যায় তামিমের দল।
ছোট লক্ষ্যে মাহমুদউল্লাহ একাদশের শুরুটা ভালো ছিল না। তিনজন ব্যাটসম্যান রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন। এরপর মুমিনুল হকের ৩৯ ও ম্যাচের সেরা ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহানের অপরাজিত ৪১ রানের সুবাদে ২৭ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় মাহমুদউল্লাহর দল। ৫০ ওভারের এই টুর্নামেন্টে এটা তাদের প্রথম জয়। প্রথম ম্যাচে নাজমুল একাদশের বিপক্ষে হেরেছিলেন মাহমুদউল্লাহরা।
১০৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে দুঃস্বপ্নের মতো শুরু হয় মাহমুদউল্লাহ একাদশের। রানের খাতা খোলার আগেই নাঈম শেখকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ইনিংসের প্রথম ওভারটি মেইডেন করা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন পরের ওভারে লিটস দাসের স্টাম্প উপড়ান।
ইমরুল কায়েসকেও সুযোগ দেননি আগুনে বোলিং করা সাইফউদ্দিন। এই ওভারেরই পঞ্চম বলে ইমরুলকে আউট করেন সাইফউদ্দিন। শূন্য রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে মাহমুদউল্লাহ দলের তখন ওলট-পালট অবস্থা। এমন অবস্থায় দলের হাল ধরেন মুমিনুল ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
এই জুটি থেকে ৩৯ রান পায় তারা। মাহমুদউল্লাহ ১০ রান করেন থামেন। এরপর মুমিনুল ও নুরুল হাসান সোহান দলকে পথ দেখাতে থাকেন। বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল ৬২ বলে ৬টি চারে ৩৯ রান করেন। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়া সোহান ৩৮ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৪১ রান করেন সোহান। ৮ রানে ২ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। এ ছাড়া তাইজুল ২টি ও মুস্তাফিজ একটি উইকেট নেন।
এরআগে ব্যাটিং করতে নামা তামিম একাদশের শুরুটা ভালো হয়নি। দ্বিতীয় ওভারেই অধিনায়ক তামিমকে সাজঘর দেখিয়ে দেন রুবেল হোসেন। আরেক ওভার পর শুরু হয় বৃষ্টি। ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর শুরু হয় খেলা, ম্যাচ কমিয়ে আনা হয় ৪৭ ওভারে।
বিরতির পরও গুছিয়ে উঠতে পারেনি তামিম একাদশ। আবারও আগুনে বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরেন রুবেল। যদিও তানজিদ হাসান তামিম ও এনামুল হক বিজয়ের ব্যাট বিপদ কাটিয়ে ওঠার সম্ভাবনা জেগেছিল। কিন্তু দলীয় ৪২ রানে তানজিদ তামিমকে ফিরিয়ে দেন রুবেল। ফেরার আগে ১৮ বলে ৩টি চারে ইনিংস সেরা ২৭ রান করেন বাংলাদেশের যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের এই ব্যাটসম্যান।
এই ওভারে মোহাম্মদ মিঠুনকেও আউট করেন রুবেল। ৪২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ঘোর সঙ্কটে পড়ে যায় তামিমের দল। এই সঙ্কট আরও বাড়ান মাহমুদউল্লাহ একাদশের আরেক পেসার সুমন খান। আরেক যুবা ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনকে ফেরান তিনি। ২৫ রান করা এনামুল হক বিজয়ও থামেন সুমনের শিকারে পরিণত হয়ে।
এরপর মাহেদী হাসান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ব্যাটে ১০০ পেরোয় তামিম ইকাদশ। ডানহাতি স্পিনার মাহেদী ১৯ রান করেন। সাইফউদ্দিন করেন ১২ রান। রুবেল-সুমনের পর আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে দিক হারায় তামিমের দল। আগুনে বোলিং করা রুবেল মাত্র ১৬ রান খরচায় ৩টি উইকেট নেন। ৩১ রানের সুমনের শিকারও ৩ উইকেট। মিরাজ ২ রানে দুই উইকেট পান। ২ উইকেট নিতে বিল্পবের খরচা ১৭ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
তামিম একাদশ: ২৩.১ ওভারে ১০৩/১০ (তানজিদ তামিম ২৭, এনামুল বিজয় ২৫, মাহেদী ১৯, সাইফউদ্দিন ১২; রুবেল ৩/১৬, সুমন ৩/৩১, মিরাজ ২/২, বিপ্লব ২/১৭)।
মাহমুদউল্লাহ একাদশ: ২৭ ওভারে ১০৬/৫ (মুমিনুল ৩৯, মাহমুদউল্লাহ ১০, সোহান ৪১*, সাব্বির ৪*; সাইফউদ্দিন ২/৮, মুস্তাফিজ ১/১৪, তাইজুল ২/২৭)
ফল: মাহমুদউল্লাহ একাদশ ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা: রুবেল হোসেন (মাহমুদউল্লাহ একাদশ)
সেরা ব্যাটসম্যান ও ফিল্ডার: নুরুল হাসান সোহান (মাহমুদউল্লাহ একাদশ)
সেরা বোলার: সুমন খান (মাহমুদউল্লাহ একাদশ)