সৌদি তেলক্ষেত্রে হামলার জবাব দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র : ট্রাম্প
সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় ‘নজিরবিহীন’ হামলার জবাব দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এ কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, এ হামলায় ইরানের হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। খবর এএফপি’র।
ট্রাম্প বলেন, সপ্তাহান্তে এ ড্রোন হামলার পর তিনি তাদের প্রধান মিত্র দেশ সৌদি আরবকে এ ব্যাপারে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছেন। তবে এ হামলায় কারা জড়িত তা ‘নিশ্চিত’ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
মার্কিন নেতা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের হাতে অনেক বিকল্প রয়েছে। এ ব্যাপারে তাড়াহুড়া করে কোন জবাব দেয়া যাবে না। এটা নিয়ে প্রথমে মিত্রদের সাথে আলোচনা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি নতুন করে সংঘাতে জড়াতে চাই না। তবে আপনাদের এ ব্যাপারে কিছু একটা করতে হবে। কেননা, এটি ছিল অত্যন্ত বড় একটি হামলার ঘটনা।’
ট্রাম্প বলেন, ‘অবশ্যই এতে ইরানের হাত থাকার সম্ভাবনাই প্রবল।’
ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক ইস্পার আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে নির্দিষ্টভাবে ইরানের নাম উল্লেখ করে এ হামলায় ইরানের হাত থাকার ইঙ্গিত দেন।
তিনি বলেন, মার্কিন সামরিক বাহিনী এই নজিরবিহীন হামলার ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণে মিত্রদের সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সৌদি আরবের তেল শোধনাগারে চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন হামলা হয়।
এর জন্য ইরানকে দায়ী করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।
সৌদি রাষ্ট্রীয় খাতের প্রতিষ্ঠান আরামকো পরিচালিত দুটি তেল উত্তোলন ক্ষেত্রে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। কিন্তু পম্পেও তাদের সেই দাবি নাকচ করে দেন।
এক টুইট বার্তায় পম্পেও বলেন, ইয়েমেন থেকেই যে ড্রোনগুলো এসেছিল, তার কোন প্রমাণ নেই। বিশ্বের তেল সরবরাহে এটি ছিল একটি নজিরবিহীন হামলা।
‘আমরা পৃথিবীর সব জাতিকে আহ্বান জানাই ইরানের এই হামলার প্রকাশ্য ও দ্ব্যর্থহীন নিন্দা জানাতে’, যোগ করেন তিনি।
বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সাথে কাজ করবে উল্লেখ করে মার্কিন মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই আগ্রাসনের জন্য ইরানই দায়ী’।
গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে শনিবার দেখা যায়, আবাকাইক শহরে আরামকোর বৃহত্তম তেল প্রক্রিয়াজাত প্রকল্পে বিরাট অগ্নিকাণ্ড হয়। এসময় খুরাইস তেলক্ষেত্রে দ্বিতীয় একটি ড্রোন আক্রমণ ঘটে যা সেখানেও অগ্নিকাণ্ড সৃষ্টি করে।
আবাকাইক তেল পরিশোধনাগারটি সৌদি আরবের পূর্বের প্রদেশ দাহরাইন থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেলক্ষেত্র খোড়াইস তার থেকে আরও প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে।
এর আগে ২০০৬ সালে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী আবকোয়াইক তেল পরিশোধনাগারে আল কায়েদার আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানোর প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছিল।