সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের মতো পালাবো না: সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ভুসিচ
সার্বিয়ার বিরোধীরা প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুসিচকে সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা বাশার আল-আসাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বিদ্রোহীদের আন্দোলনের মুখে মস্কো পালিয়ে যান আসাদ এবং তার পরিবারের প্রায় অর্ধ-শতাব্দীর শাসনের অবসান ঘটে।
বিরোধীদের দাবি, ভুসিচও তার ক্ষমতার দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ হারালে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করতে পারেন। সার্বিয়ায় চলমান বিক্ষোভের পটভূমি তৈরি হয়েছে ১ নভেম্বর উত্তরাঞ্চলীয় শহর নোভি সাদের একটি রেল স্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জন নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
ভুসিচের সমালোচকরা মনে করছেন, এই ঘটনা তার প্রশাসনের অদক্ষতা তুলে ধরেছে এবং তার জনপ্রিয়তাকে গুরুতর সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
নোভি সাদ, বেলগ্রেড এবং সার্বিয়ার অন্যান্য শহরের বিক্ষোভকারীরা রেল স্টেশনের মর্মান্তিক ধসের জন্য দেশজুড়ে চলমান দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন। তাদের দাবি, এই দুর্নীতির কারণেই নোভি সাদের স্টেশন ভবনের সংস্কারকাজে গাফিলতি হয়েছে এবং এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বিক্ষোভকারীরা জানান, এটি সার্বিয়ায় চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে হওয়া একাধিক অবকাঠামো প্রকল্পের একটি অংশ। তারা অভিযোগ করেছেন, এই প্রকল্পগুলো দুর্নীতি ও নিম্নমানের কাজের উদাহরণ হয়ে উঠেছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনের জন্য বিপজ্জনক।
এই পরিস্থিতিতে সরকারকে আরও স্বচ্ছতার দাবি জানিয়ে সার্বিয়া জুড়ে বিক্ষোভের ঢেউ ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে।
এদিকে এক ভিডিও বার্তায় ভুসিচ অভিযোগ করেন, "সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে, তা পশ্চিমা শক্তির আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। এসবের উদ্দেশ্য হলো তাকে ও তার সরকারকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা।" তিনি আরও বলেন, "তারা যদি ভাবে আমি আসাদ এবং আমি কোথাও পালিয়ে যাব, তবে তা হবে না।"
ভুসিচ আরও দাবি করেন, সার্বিয়াকে দুর্বল করার জন্য গত চার বছরে বিদেশি শক্তিগুলো কীভাবে ও কত অর্থ ব্যয় করেছে, তা শীঘ্রই বিস্তারিত প্রকাশ করবেন। তিনি অভিযোগ করেন, এই ষড়যন্ত্রের লক্ষ্য সার্বিয়াকে একটি অনুগত রাষ্ট্রে পরিণত করা।
প্রধানমন্ত্রীকে সরানোর দাবিতে তীব্র জনঅসন্তোষ এবং পশ্চিমা প্রভাবের প্রশ্ন নিয়ে সার্বিয়া বর্তমানে এক উত্তাল রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।