তারেক রহমানকে প্রতি মাসে ১ কোটি টাকা দিতেন জি কে শামীম: তথ্যমন্ত্রী
জুয়া-ক্যাসিনো বন্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান অভিযানের মধ্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন জি কে শামীম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রতি মাসে এক কোটি টাকা দিতেন।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দেশের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে রাজশাহী সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে খবর এসেছে যে, যুবলীগ পরিচয়ে ঠিকাদারি ব্যবসার নিয়ন্ত্রক জি কে শামীম প্রতি মাসে ১ কোটি টাকা দিতেন তারেক রহমানকে। বিএনপির অনেক নেতাকেও অর্থ দিতেন। অর্থাৎ এই ক্যাসিনো-কালচার যারা শুরু করেছিলেন, তারা নিয়মিত মাসোহারা পেতেন। আমরা কে কোন দলের বা মতের সেটি না দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছি।”
ক্যাসিনো-সংষ্কৃতির শুরু হয়েছে বিএনপি সরকারের আমলে এবং তখন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা এর সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
“এই ক্যাসিনো-সংষ্কৃতি বিএনপির আমলেই শুরু হয়েছে। সাদেক হোসেন খোকা, মির্জা আব্বাস, মোসাদ্দেক হোসেন ফালুরা এটা শুরু করেছিলেন। তখন ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায় এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন কে কোন দলের বা মতের তা না দেখে বরং তদন্তসাপেক্ষে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদক ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছেন বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
“অন্যদিকে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন শীর্ষ পর্যায় থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি করা হয়েছে। হাওয়া ভবন তৈরি করে প্রত্যেক ব্যবসায় দশ পারসেন্ট কমিশন নেওয়া হতো। তারেক রহমানের ১০ বছরের সাজা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে,” যোগ করেন তিনি।
ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে এত দিন কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “ব্যবস্থা আগেও নেওয়া হয়েছে। তবে এখন সাঁড়াশি অভিযান চলছে।”
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
সে বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের যে সংঘর্ষ হয়েছে, সেখানে কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। সেজন্য ছাত্রলীগ দুঃখ প্রকাশ করেছে। তবে ছাত্রদলের কাউন্সিল হয়েছে কয়েকদিন আগে। ছাত্রদলের বিদায়ী কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক একটি মামলা করেছিলেন। সে মামলার কারণে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই এই হামলায় ছাত্রদলের বিদায়ী কমিটি কিংবা অন্য কেউ জড়িত আছেন কিনা তা খাতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
তিনি বলেন, “চলমান এই অভিযান আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নয়। আওয়ামী লীগ স্বচ্ছ-পরিচ্ছন্ন একটি দল। আমরা সব সময় পরিচ্ছন্ন রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। আজকেও পত্রপত্রিকায় দেখলাম, সাতজন নামকরা লোকের খবর বেরিয়ে এসেছে। তাদের মধ্যে ছয়জনই অনুপ্রবেশকারী। এরা আওয়ামী লীগের না। এরা মির্জা আব্বাস অথবা কোকোর সৃষ্টি। এই দানবগুলোকে এখন ধরা গেছে।”