ছন্দে ফেরা খুলনার তিনে তিন
প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়ার পর পথ হারিয়ে বসেছিল জেমকন খুলনা। জয়ের পথ ফিরে পেতে পেতে দুটি ম্যাচে হেরে বসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। তবে চতুর্থ ম্যাচ দিয়ে জয়ে ফেরার পর থেকে খুলনার শাসন চলছেই। মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীকে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে দলটি।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে রোববারের দ্বিতীয় ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে জেমকন খুলনা। ছয় ম্যাচে ৪টিতে জিতে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে উঠে গেছে তারা। অন্যদিকে প্রথম দুই ম্যাচ জেতার পর আর জয়ের দেখা পায়নি রাজশাহী। টানা চার ম্যাচে হেরে প্লে অফের পথ কঠিন করে তুললো তারা।
রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর হাফ সেঞ্চুরি ও নুরুল হাসান সোহানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেটে ১৪৫ রান তোলে রাজশাহী।
জবাবে ভালো শুরুর পরও বারবার দিক হারিয়ে সহজ পথ কঠিন করে তোলে জেমকন খুলনা। কঠিন কাজটা সম্পন্ন করেছেন খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৩১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে ৪ বল বাকি থাকতেই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনার শুরুটা খারাপ হয়নি। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৬ রান যোগ করেন দুই ওপেনার জহুরুল ইসলাম অমি ও জাকির হাসান। জাকির ১৯ রান করে থামলেও খুলনার বিপদ হয়নি। ইমরুল কায়েসের সঙ্গে আরও একটি ছোট জুটি গড়ে তোলে জহুরুল। দলীয় ৭৬ রানে থামতে হয় জহুরুলকে। এরআগে ৪০ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৩ রান করেন তিনি।
ইমরুলকে বেশ সাবলীল মনে হলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ২০ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ২৭ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন কিছুক্ষণ পরই সাকিব আল হাসানকে ফেরালে বিপদ বাড়ে খুলনার। চলতি আসরে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতেই পারছেন না বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। ৬ ম্যাচে মাত্র ৫৯ রান করেছেন তিনি।
এরপর লড়াই চালিয়েছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আরিফুল হক। আরিফুলকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ দক্ষতায় শেষটা করেছেন মাহমুদউল্লাহ। সাইফউদদ্দিনের করা ১৯তম ওভার থেকে ১৫ রান তোলেন তারা। শেষ ওভারে ৬ রানের দরকার হলে প্রথম দুই বল থেকেই তারা তুলে নেন আরিফুল হক। মাহমুদউল্লাহ ১৯ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় অপরাজিত ৩১ রান করেন। ১০ রানে অপরাজিত থাকেন আরিফুল। রাজশাহীর মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ২টি এবং সাইফউদ্দিন, আরাফাত সানি ও ফরহাদ রেজা একটি করে উইকেট নেন।
এরআগে ব্যাটিং করা রাজশাহীর শুরুটা হয় হতাশার। দলীয় ৪ রানেই ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমনকে হারায় তারা। রনি তালকুদারকে সঙ্গে নিয়ে এই চাপ কাটিয়ে তোলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। রনি তালুকদার ১৪ রান করে থামলেও শান্ত অবিচল থাকেন। তবে অন্য প্রান্তে উইকেট পড়তে থাকে। এর মাঝেই রান তোলার কাজটি করে যান শান্ত। যদিও মাহেদী হাসানের বিদায়ের পর দিক হারান শান্তও।
ফেরার আগে ৩৮ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৫ রানের মহাকার্যকর ইনিংস খেলেন রাজশাহীর অধিনায়ক। এরপর রাজশাহীর রানচাকা ঘুরিয়েছেন নুরুল হাসান সোহান ও জাকের আলী। সোহান ২১ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৭ রানের হার না মানা ঝড়ো ইনিংস খেলেন। জাকের আলী ১৯ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। খুলনার শুভাগত হোম ২টি এবং আল আমিন হোসেন, শহিদুল ইসলাম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ একটি করে উইকেট পান।