পাসপোর্ট সক্ষমতার বৈশ্বিক সারণীতে আরও তিন ধাপ পিছিয়ে শেষ দশে বাংলাদেশ
জাতীয়তার অন্যতম সনদ পাসপোর্ট শক্তি বা মূল্যায়নের উপর ভিত্তিতে প্রতিবছর সারণী তালিকা প্রকাশ করে হেনেলি পাসপোর্ট ইনডেক্স। নতুন বছর ২০২১ সালে সেখানে বিগত ২০২০ সালের চাইতেও তিন ধাপ অবনতি হয়েছে বাংলাদেশের। ফলে সবুজরঙা পরিচয়পত্রের ঠাঁই হয়েছে ১০১তম স্থানে।
গত মঙ্গলবার র্যাংকিং সারণীটি প্রকাশিত হয়। পাসপোর্ট মূল্যায়নে অন্যতম মানদণ্ড হিসাবে আগে থেকেই ভিসা ছাড়াই সরাসরি কোন দেশ ভ্রমণের ক্ষমতাকে গুরুত্ব দেয় হেনেলি। ওই সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা মাত্র ৪১টি দেশে এভাবে ভ্রমণ করতে পারেন।
এক দশক আগে অবশ্য এদেশের পাসপোর্টধারীরা ২২৭টি দেশের মধ্যে ৩৯টিতে ভ্রমণ করতে পারতেন কোন আগাম ভিসার প্রয়োজন ছাড়াই।
নতুন দশকে এই প্রথমবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স (এইচপিআই)। হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স পরিমাপ করে বিশ্বের সবচেয়ে ভ্রমণ সহায়ক পাসপোর্ট। সম্প্রতি তারা পাসপোর্ট নিয়ে নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে- এবং সামনে আসতে পারে এই সংক্রান্ত বিশ্লেষণ।
এবছরও, টানা চতুর্থ বছরের মতো পাসপোর্টের এই সূচকে জাপান ধরে রেখেছে শীর্ষস্থান। দেশটির পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারে ১৯১টি দেশে ।
অন্যদিকে ২০২০ সালের মতো এবার'ও আফগানিস্তানের পাসপোর্টকে চিহ্নিত করা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল পাসপোর্ট হিসেবে। মাত্র ২৬টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া প্রবেশ করতে পারে দেশটির পাসপোর্টধারীরা।
২০২১ সালের সেরা পাসপোর্টধারী দেশগুলো হচ্ছে:
- ১. জাপান (১৯১টি দেশ)
- ২. সিঙ্গাপুর (১৯০)
- ৩. দক্ষিণ কোরিয়া ও জার্মানি (১৮৯)
- ৪। ইতালি, ফিনল্যান্ড, স্পেন, লুক্সেমবার্গ (১৮৮)
- ৫। ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া (১৮৭)
- ৬। সুইডেন, ফ্রান্স, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড (১৮৬)
- ৭। সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, বেলজিয়াম, নিউজিল্যান্ড (১৮৫)
- ৮। গ্রীস, মাল্টা, চেক প্রজাতন্ত্র, অস্ট্রেলিয়া (১৮৪)
- ৯। কানাডা (১৮৩)
- ১০। হাঙ্গেরি (১৮১)
আর সবচেয়ে কম ক্ষমতাসম্পন্ন পাসপোর্টধারী দেশগুলো হচ্ছে-
বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ৪০টিরও কম দেশে ভিসা-মুক্ত ভ্রমণের বা অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুযোগ রয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে:
- ১০৩। উত্তর কোরিয়া (৩৯ টি দেশে)
- ১০৪। লিবিয়া, নেপাল (৩৮)
- ১০৫। ফিলিস্তিনি অঞ্চল (৩৭)
- ১০৬। সোমালিয়া, ইয়েমেন (৩৩)
- ১০৭। পাকিস্তান (৩২)
- ১০৮। সিরিয়া (২৯)
- ১০৯। ইরাক (২৮) ও
- ১১০। আফগানিস্তান (২৬)
অন্যান্য সূচক:
হেনলি অ্যান্ড পার্টনার-এর সূচক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরি করা সূচকগুলোর মধ্যে অন্যতম। যা নির্ধারণ করা হয় কোন দেশের পাসপোর্ট সেই দেশের নাগরিক'কে কতটা সুবিধা দিচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে।
হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স তৈরি করা হয় ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (আইএটিএ) কর্তৃক প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে। এতে ১৯৯টি পাসপোর্ট এবং ২২৭টি ভ্রমণ গন্তব্যের উপর ভিত্তি করে সক্ষমতা নির্ধারিত হয়।
সারা বছরই তারা পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য সংযোজন করতে থাকে, ফলে নানা দেশের ভিসা নীতির রদবদলও সেখানে যুক্ত হয়।
আর্টন ক্যাপিটালের পাসপোর্ট সূচক বিবেচনায় রাখে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্র এবং ছয়টি অঞ্চলের পাসপোর্টকে। অন্য দেশের মধ্যে বিতর্কিত স্থানকে তারা গন্তব্যস্থানের স্বীকৃতি দেয় না। যেগুলো হচ্ছে- গণপ্রজাতন্ত্রী তাইওয়ান, ম্যাকাও (এসএআর চীন), হংকং (এসএআর চীন), কসোভো, ফিলিস্তিনি অঞ্চল এবং ভ্যাটিক্যান।
তাছাড়া সূচক থেকে বাদ দেওয়া হয় অন্যান্য দেশের সাথে সংযুক্ত অঞ্চলগুলিকে।