ভিডিওকলে আদালতে হাজির করা হলো সু চি’কে
সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই প্রথম দেখা মিলেছে মিয়ানমারের সাবেক রাষ্ট্রনায়ক অং সান সু চি'র। আজ সোমবার (১ মার্চ) তাকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে রাজধানী নেপিদোর একটি আদালতের বিচারকাজে হাজির করে সেনা কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত আসামী হিসেবে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত এ নেত্রী।
সু চি'র আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ভিডিওতে তাকে বেশ সুস্থই দেখাচ্ছিল। গত ১ ফেব্রুয়ারি আটক এ নেত্রীর বিরুদ্ধে সোমবার নতুন করে আরও দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
আগেরদিন গতকাল রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জান্তা বিরোধী বিক্ষোভের সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন পার করে মিয়ানমার। সারাদিনে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর, প্রকৃত সংখ্যা তার চাইতেও বেশি হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।
প্রতিবেশী দেশটিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন দমনে কঠোর অবস্থান নিয়ে, রোববার ভিড়ের মধ্যেই তাজা গুলি চালিয়ে দেয়।
তারপরও, আজ সোমবার দমন চেষ্টাকে উপেক্ষা করে বিক্ষোভ হয়েছে। সমাবেশগুলো থেকে উঠেছে নির্বাচিত সরকারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং অং সান সু চি'সহ তার দলের অন্যান্য নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি।
জান্তার দাবি, এনএলডি সরকার গেল নভেম্বরের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি করে জয়ী হয়। এই অজুহাতে তারা ক্ষমতা দখল করলেও, অভিযোগের পক্ষে কোনো জোরালো প্রমাণ দেয়নি। তবে প্রমাণ না দিলেও, তারা নির্বাচন কমিশনে নিজেদের মনমতো প্রশাসনিক পরিবর্তন এনেছে এবং এই কমিশনের মাধ্যমেই এক বছর পর নতুন নির্বাচনের অঙ্গীকার করেছে।
সু চি এখন কোথায়?
৭৫ বছরের সু চি'কে আজ আদালতে শুনানির আগে কোনোপ্রকার বার্তা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ, রাজধানী নেপিদোর আদালতে ভার্চুয়াল উপস্থিতির আগে তিনি ছিলেন অদৃশ্য। গত এক মাস যাবত তাকে কোথায় আটক করে রাখা হয়েছে তাও স্পষ্ট নয়। তবে স্থানীয় কিছু সংবাদ সূত্র জানিয়েছে, নেপিদোতে নিজ বাসভবনেই আটক করে সেনাবাহিনী, এরপর তাকে অজ্ঞাত এক স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
সু চি'র বিরুদ্ধে উচ্চ সক্ষমতার ওয়াকিটকি-সহ বেশকিছু যোগাযোগ সরঞ্জাম আমদানি আইন ভেঙ্গে আমদানি করার অভিযোগ এনেছে সেনাবাহিনী। সোমবার তার সঙ্গে আরও দুই অভিযোগ যোগ হয়। যারমধ্যে আছে, গেল নভেম্বরে নির্বাচনের সময় কোভিড-১৯ নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে জন-সংযোগ এবং অহেতুক 'ভীতি এবং অস্থিরতা' তৈরির মতো অভিযোগ।
প্রথম অভিযোগটির কারণে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিতে পারবে জান্তা নিয়ন্ত্রিত আদালত। তবে পরের অভিযোগগুলো প্রমাণ করে তাকে কী সাজা দেওয়া হবে- তা স্পষ্ট নয়। তবে আগামীতে যেকোনো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে তাকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে করা মামলা আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত মূলতুবী রেখেছেন আদালত।
- সূত্র: বিবিসি