জার্মান আদালতে সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের
সৌদি আরবের প্রধান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং দেশটির শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ সংগঠনের অভিযোগ এনেছে মুক্ত গণমাধ্যমের স্বপক্ষের বৈশ্বিক গোষ্ঠী- রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স- আরএসএফ। জার্মানির একটি আদালতে অভিযোগটি দায়ের করেছে সংস্থাটি।
কার্লশ্রুহে অবস্থিত জার্মান পাবলিক প্রসিকিউটরের ফেডারেল আদালতে ৫শ' পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রটি দায়ের করা হয়। সেখানে সৌদি আরবে সাংবাদিকদের 'নিয়মতান্ত্রিকভাবে এবং নির্বিচারে' দমন-পীড়নের অভিযোগকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে আছে রাজনৈতিক বিবেচনায় নির্বিচারে বন্দিত্বের শিকার ৩৪ জন সাংবাদিক-সহ স্বেচ্ছা-নির্বাসনে থাকা ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনা।
আজ মঙ্গলবার (২ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে আরএসএফ মহাসচিব ক্রিস্টোফার ডিলোইরে বলেন, "এসব সাংবাদিক অন্যায়ভাবে হত্যা, নির্যাতন, যৌন সহিংসতা, অপদস্থ হওয়া এবং জোরপূর্বক নিরুদ্দেশের শিকার হয়েছেন।
জার্মান আইন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে হওয়া অপরাধ দেশটিতে বিচার করার সুযোগ দেয়। এজন্যেই জার্মানিতে অভিযোগ দায়ের করেছে আরএসএফ।
আরএসএফ ইঙ্গিত দেয় যে, তাদের প্রত্যাশা অভিযোগের প্রেক্ষিতে জার্মান কৌসুলীরা সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানসহ অন্য চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি অনুসন্ধান প্রক্রিয়া শুরু করবেন। মামলা হিসেবে গ্রহণের আগের এই প্রক্রিয়ায় অপরাধের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করা হয়। তার প্রেক্ষিতেই প্রাথমিক বিচারিক তদন্ত শুরু করা যেতে পারে যুবরাজ এবং অভিযোগে উল্লেখ করা অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। সাংবাদিকদের দমনের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে তারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছেন কিনা- সেটা তখন নির্ধারণ করবেন আদালত।
আরএসএফ- এর জার্মান শাখা পরিচালক ক্রিশ্চিয়ান মিহর বলেন, "জার্মানিতে তদন্ত শুরু হলে এটাই হবে বিশ্বে প্রথম সৌদি আরবের মানবতা বিরোধী অপরাধ অন্য দেশের আদালতে তদন্তের ঘটনা। বিচারিক তদন্ত শুরুর আগে আমরা প্রধান কৌসুলির কাছে অপরাধের নেপথ্য দৃশ্যপট বিশ্লেষণের আহবান জানিয়েছি, যার ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণ হলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা যাবে।"
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, সৌদিতে আটক সাংবাদিকরা মানবতাবিরোধী নানা অপরাধ যেমন; বিচার বহির্ভূত হত্যা, যৌন নির্যাতন, গুম, সম্পদ বাজেয়াপ্ত, জিম্মি করা এবং দমনের শিকার হয়েছেন। তবে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির ঘটনা উল্লেখ করে, তারা দেশটিতে সরকার বিরোধী অবস্থান নেওয়া সকল সাংবাদিকই যে হুমকির মুখে আছেন- সেদিকে আলোকপাত করেছে।