দাপুটে জয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারত
সমীকরণটা জানাই ছিল ভারতের। জয় অথবা ড্রয়ে মিলে যাবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টিকেট। এমন সমীকরণের ম্যাচে ভারতের দাপটের সামনে পাত্তাই পেল না ইংল্যান্ড। সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টেস্টে দাপুটে জয় তুলে নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে গেল বিরাট কোহলির দল।
আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে তিনদিনেই জেতে গেছে ভারত। অক্ষর প্যাটেল ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের স্পিন ভেল্কিতে ইনিংস ও ২৫ রানে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে তারা। দাপুটে এই জয়ে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিলো স্বাগতিকরা। মিললো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টিকেটও। আগামী নিউজিলান্ডের বিপক্ষে ফাইনাল খেলবে কোহলিবাহিনী।
এই ম্যাচে জয়-পরাজয় বা ড্রয়ের সমীকরণটা কেবল ভারতের জন্যই ছিল। ইংল্যান্ড জিতলেও লাভ হতো না, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠতে পারতো না ক্রিকেটের জনক দেশটি। ইংলিশদের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত হতো অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু সিরিজ রক্ষার ম্যাচে জয় তো দূরের কথা, সামান্যতম লড়াইও করতে পারলো না ইংলিশরা।
আহমেদাবাদের স্পিন স্বর্গে আগের ম্যাচের মতোই ধুঁকেছে ইংলিশরা। তৃতীয় টেস্টের মতো এই ম্যাচটিও দুই দিনেই শেষ হতে পারতো। কিন্তু ভারতের প্রথম ইনিংসের সুবাদে সেটা হয়নি। টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ২০৫ রানে। অক্ষর ৪টি, অশ্বিন ৩টি, মোহাম্মদ সিরাজ ২টি ও ওয়াশিংটন সুন্দর একটি উইকেট নেন।
জবাবে দুঃস্বপ্নের শুরু হওয়া ভারতের প্রথম ইনিংস অন্ধকারে পড়ে যায়। ৮০ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে ঘরের মাঠের দলটি। জিমি অ্যান্ডারসন, বেন স্টোকসের শিকারে পরিণত হয়ে ফিরে যান শুভমান গিল, চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলি, অজিঙ্কা রাহানেরা।
এখান থেকে দলের হাল ধরে ১০১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে ভারতকে অনেকটা পথ এগিয়ে দেন ম্যাচ সেরা ঋষভ পন্ত। এরপর ভারতকে পথ দেখাতে শুরু করেন ওয়াশিংটন সুন্দর। পন্তের সঙ্গে ইনিংস সেরা ১১৩ রানের জুটি গড়ার পর অক্ষর প্যাটেলের সঙ্গেও ১০৬ রানের জুটি গড়েন ওয়াশিংটন।
ওয়াশিংটনকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন অক্ষর প্যাটেল। বাঁহাতি এই বোলিং অলরাউন্ডার ৪৩ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু অক্ষর আউট হওয়ার পর দলের রান বাড়িয়ে নেওয়ার বা নিজের সেঞ্চুরি পর্ণ করার সুযোগ পাননি ওয়াশিংটন। ১১৫তম ওভারের প্রথম ও চতুর্থ বলে ইশান্ত শর্মা ও মোহাম্মদ সিরাজকে ফিরিয়ে ভারতের ইনিংসের ইতি টেনে দেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার বেন স্টোকস।
অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে ওয়াশিংটন সুন্দরকে কেবল দলের উইকেট পতনই দেখে যেতে হয়। ২২ গজের ওপারটা বেশি দূরে না হলেও সেঞ্চুরি থেকে তার ৪ রানের ব্যবধান বিশালই থেকে যায়। ৯৬ রানের হার না মানা ইনিংসে ওয়াশিংটন বল মোকাবেলা করেছেন ১৭৪টি। যেখানে ছিল ১০টি চার ও একটি ছক্কার মার।
সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেও দলকে এগিয়ে নেওয়ার তৃপ্তি আছে ওয়াশিংটনের। পন্তের ১০১ ও তার ৯৬ রানের সুবাদেই প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান তোলে ভারত। এতে প্রথম ইনিংসেই মেলে ১৬০ রানের বড় লিড। যে রান পাড়ি দিতে নেমে ১৩৫ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস। অক্ষর ও অশ্বিন ৫টি করে উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দেন জো রুটের দলকে।