৮ ঘণ্টা পর ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
প্রায় ৮ ঘণ্টা পর ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটের রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
আখাউড়া রেল স্টেশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল কান্তি দাস দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) লাইনচ্যুত তিনটি বগি সরিয়ে নেয়া হলে বেলা ১১ টার দিকে স্বাভাবিক হয় ট্রেন চলাচল।
এর আগে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে কসবার মন্দবাগ এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী তূর্ণা নিশিথা ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের ফলে ট্রেন দুইটির তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে বলে জানান ওসি শ্যামল কান্তি দাস।
এতে অন্তত ১৬ জন নিহত এবং শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে।
আহতদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় বাংলাদেশ রেলওয়ে পক্ষ থেকে দুটি ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটিসহ মোট তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রেলের দুটি কমিটির একটিতে প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (পূর্বাঞ্চল) মিজানুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি এবং চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনকে প্রধান করে চার সদস্যের অপর এক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অপরদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিতু মরিয়মকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
সিগন্যালের ভুল বোঝাবুঝি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে বলে ধারণা করছেন জেলা প্রশাসক হায়াতউদদৌলা খান।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মঙ্গলবার সকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সিগন্যাল অমান্য করে তূর্না নিশিথা ট্রেনটি উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের ওপর আছড়ে পড়ে।
“উদয়ন ট্রেনটি ক্রস করছিল বলে ধীরগতিতে ছিল। দুটো ট্রেন ক্রস করার সময় সম্ভবত সিগন্যালের ভুল বোঝাবুঝিতে একটি ট্রেনের সাথে আরেকটি ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে,” যোগ করেন তিনি।
হতাহতের উদ্ধার কার্যক্রম চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, মৃতদের নিকট আত্মীয় স্বজন খোঁজা হচ্ছে, পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে।
এছাড়া, পরিচয় শনাক্তের পর নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দিয়ে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
এদিকে, ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
মঙ্গলবার সকালে দুইটি পৃথক শোকবার্তায় তাঁরা দুর্ঘটনায় নিহতদের রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
দুর্ঘটনায় আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করে প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান।