করোনাভাইরাসের দুই বার অভিযোজিত নতুন ধরনের সন্ধান মিলেছে ভারতে
একবার নয়, পরপর অন্তত দুইবার অভিযোজিত করোনাভাইরাসের একটি নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে প্রতিবেশী ভারতে। আজ বুধবার (২৪ মার্চ) নতুন এ ধরনের কথা জানায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। করোনা সংক্রমণের দৈনিক হার ও মৃত্যু সংখ্যা সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে আসার মধ্যেই নতুন এই আবিষ্কার- দেশটির মহামারি পরিস্থিতি আরও অবনতির উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, জিনোম সিকোয়েন্সিং ও বিশ্লেষণের ভিত্তিতে মহারাষ্ট্র রাজ্যে জীবাণুর অভিযোজিত এ ধরনের সন্ধান মেলে। ইতোপূর্বে, শনাক্ত হওয়া 'উদ্বেগজনক ধরনগুলি'র সঙ্গে এর কোনো মিল নেই।
ভারতে করোনা মহামারিতে সবচেয়ে প্রভাবিত রাজ্যগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে মহারাষ্ট্র। কিন্তু, নতুন ধরনটি মহারাষ্ট্র বা অন্যান্য রাজ্যে সংক্রমণ হার বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখছে কিনা- সেব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
"'উদ্বেগজনক ধরনগুলি এবং নতুন সন্ধান পাওয়া দুবার অভিযোজিত ধরনটি ভারতে পাওয়া গেলেও, সেগুলো যথেষ্ট সংখ্যায় শনাক্ত হয়নি। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু রাজ্যে ব্যাপক সংক্রমণ সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে তাদের সরাসরি ভূমিকা রয়েছে- এমনটি প্রমাণ করা যাচ্ছে না" বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
তবে এব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
ইতোমধ্যেই, ভারতে বেশ কিছু কোভিড রোগীর মধ্যে শনাক্ত হয়েছে যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে অভিযোজিত করোনার নতুন ধরনগুলো।
বুধবার গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭,২৬২ জনের সংক্রমিত হওয়ার কথা জানিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ, যা গেল নভেম্বরের প্রথমদিকের পর সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ হার। ফলে মোট সংক্রমণ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৭ লাখে। আক্রান্তের সংখ্যায় শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিল এর চাইতে এগিয়ে রয়েছে।
এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৭৫ জন, যা চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দৈনিক মৃত্যু সংখ্যা। এরফলে সরকারি হিসেবে মোট প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়ালো ১,৬০,৪৪১ জনের।
হিন্দুধর্মের অন্যতম প্রধান উৎসব হোলি চলতি সপ্তাহন্তেই, তার আগেই দেশটির কিছু রাজ্য প্রশাসন বড় আকারে জমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, উৎসব পালন সংযত রাখতে রাজ্যগুলিকে 'জোর সুপারিশ' করা হয়েছে।
"কোভিড-১৯ বিস্তার প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দিক থেকে এই মুহূর্তে কোনো প্রকার ছাড় দিলে- মহামারি ব্যবস্থাপনায় এপর্যন্ত অর্জিত আমাদের সকল জাতীয় সফলতা হারিয়ে যাবে।"
সংক্রমণ সংখ্যা বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বিগ্ন উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার দেশব্যাপী চলমান টিকা কর্মসূচির পরিধি বিস্তারের কথা ঘোষণা করেছে। বয়স সীমা কমিয়ে এখন ৪৫ বছরের ঊর্দ্ধে সকল নাগরিককে টিকার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। একইসঙ্গে, সবার প্রতি টিকাগ্রহণে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছে ভারত সরকার।
মোট টিকাদানের সংখ্যায় বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। সবার আগে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীন। তবে মাথাপিছু হারের দিক থেকে দেখলে ভারতের র্যাংকিং বেশ নিচের দিকেই বলে জানা যায়- আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা ওয়েবসাইট সূত্রে।