জলোচ্ছ্বাস আতঙ্কে খুলনার উপকূলবাসী, মোংলা বন্দরে সর্বাত্মক প্রস্তুতি
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ধেয়ে আসার খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে 'আম্ফান' বিধ্বস্ত খুলনার সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলবাসী। দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছাসহ নদী তীরবর্তী বেড়িবাঁধের বাইরে ও বাঁধের কাছাকাছির বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলের মানুষের মধ্যে জলোচ্ছ্বাসের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় মোংলা বন্দরে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১টায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। মোংলা সমুদ্র বন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ইয়াসের প্রভাবে মোংলাসহ উপকূল অঞ্চলে ঘণ্টায় ৩৫-৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া খুলনায় ঘণ্টায় ১০-১২ কিলোমিটার বেগে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা আগামীকাল ও পরশু অব্যাহত থাকবে।
কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির জানান, সোমবার রাত থেকে কয়রায় থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নদীতে ভাটা শুরু হয়েছে। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আবারো জোয়ার শুরু হবে। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত কয়রা উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারে জলোচ্ছ্বাসের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দ্দার জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১ হাজার ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১১৬টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৫ লাখ মানুষ অবস্থান করতে পারবে।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৫ হাজার ৩২০ জন ও রেড ক্রিসেন্টর ৫০জন কর্মী দুর্যোগ মোকাবিলায় সহযোগিতার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত দেয়া হলে উপকূলীয় এলাকার মানুষদের সতর্ক করার জন্য মাইকিং করা হবে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে শুষ্ক খাবার, অর্থ, চাল-ডাল প্রস্তুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার ফখরউদ্দিন জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় বন্দর কর্তৃপক্ষ হতে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ইয়াস মোকাবিলায় আমরা সভা করেছি। এ সভায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রয়োজন অনুযায়ী এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। এই মুহূর্তে বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিটি বিভাগ তাদের মত করে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি জানান, বর্তমানে মোংলা বন্দরে ১১টি দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। এসব জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ স্বাভাবিক রয়েছে।