উড়িষ্যায় আছড়ে পড়ল অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস, বাংলাদেশে নিহত ২
স্থলভাগে আছড়ে পড়েছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বুধবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটের বুলেটিনে জানিয়েছে, উড়িষ্যার বালেশ্বরের দক্ষিণে ইয়াস-এর স্থলভাগে আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ১৫৫ কিলোমিটার।। আগামী ৩ ঘণ্টা ধরে এই প্রক্রিয়া চলবে বলেই জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
একদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস অন্যদিকে পূর্ণিমার প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূল উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চতায় কয়েক ফুট বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ছে জোয়ারের পানি। এতে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল, উত্তর ধূরুং, লেমশীখালী, মহেশখালীর ধলঘাটা, মাতারবাড়ী, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, কক্সবাজার সদরের গোমাতলীসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে স্থানীয় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিপদাপন্ন সময়ে নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করতে উপকূলের সাইক্লোন শেল্টার ও উঁচু ভবনগুলো প্রস্তুত রাখতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৭৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় এক হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বহুতল ভবন। জরুরি মুহূর্তে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে সহযোগিতার লক্ষ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৬ হাজার ৮০০ জন স্বেচ্ছাসেবক, এমনটি জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।
এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে ঝড়ের প্রচণ্ড তান্ডবে বহু গাছ উপড়ে পড়েছে এবং উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলসমূহ প্লাবিত হয়েছে।
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে গাছের চাপায় ও পানিতে ডুবে এক শিশুসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে লালমোহন উপজেলার চরসকিনা গ্রামের মোঃ আবু তাহের (৪৮) ও মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের ৭ বছরের শিশু লামিয়া। মঙ্গলবার বিকেলে পানিতে ডুবে শিশুটির মৃত্যু হয় এবং রাত সাড়ে ১১ টায় ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আবু তাহের।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মাকসুদুর রহমান মুরাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন জানান, কোনো অভিযোগ না থাকায় নিহত আবু তাহেরের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অন্যদিকে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরফয়েজউদ্দিন গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর লোকমান হোসেনের সাত বছরের মেয়ে লামিয়া বাড়ির সামনে পানিতে পড়ে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৃত পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেয়ার পাশাপাশি সকল পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।