ভারতের উত্তরপ্রদেশে করোনায় মৃত আত্মীয়ের দেহ নদীতে ফেলার ঘটনায় তোলপাড়
করোনা মহামারির সেকেন্ড ওয়য়েভের ভয়াবহ সংক্রমণের মধ্যে ভারতের উত্তরপ্রদেশের নদীগুলিতে ভাসমান মৃতদেহ চোখে পড়ছে প্রায়শই। এস মরদেহের বেশিরভাগই কোভিডে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের।
এনিয়ে গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারকে। এরমধ্যেই এবার এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের রাপ্তি নদীতে এক করোনা রোগীর দেহ ছুড়ে ফেলছেন পিপিই কিট পরে থাকা এক ব্যক্তি। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর জেলার। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় আরও অস্বস্তিতে পড়েছে যোগী সরকারের।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, একটি ব্রিজের উপর থেকে প্লাস্টিকে জড়ানো একটি মৃতদেহ নিচে নদীতে ফেলছেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তির গায়ে রয়েছে পিপিই কিট। পিপিই কিট পরে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে ভিডিওতে আরও একজনকে দেখা যাচ্ছে। সেই ব্যক্তিও এই কাজে সাহায্য করছিল।
এদিকে এভাবে দিনের বেলায় এধরনের কাজ কেউ কীভাবে করতে পারে তা নিয়ে জনমনে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়েও। এ ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সঞ্জয় শুক্লা নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মহামারি আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে এপি মিশ্র নামক এক চিকিৎসকও জড়িত।
বলরামপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভিবি সিং জানিয়েছেন, 'প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গেছে, ২৫ মে ওই রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার তিনদিন পর তার মৃত্যু হয়। কোভিড প্রোটোকল মেনেই তার দেহ আত্মীয়দের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তদন্তে দেখা গেছে, আত্মীয়রাই দেহটি নদীতে ফেলে দিয়েছেন। আমরা মামলা দায়ের করেছি। কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের মধ্যে ভারতের নদীগুলোতে কয়েক হাজার মৃতদেহ ভাসতে দেখা গেছে গত কয়েকদিনে। ভেসে আসা মরদেহ উদ্ধার করে তা সৎকার করার ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। ওদিকে নদীর আশেপাশের বাসিন্দারা এই বিষয়টি নিয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। নদীর পারে বালি চাপা অবস্থাতেও পাওয়া গিয়েছে হাজারের উপর মরদেহ। এদের বেশিরভাগেরই করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। এর জেরে এই দেহগুলি থেকে করোনা ছড়ানোর আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে।