পর্যটন খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চায় টোয়াব
২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে পর্যটন খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ার দাবি জানান তারা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে টোয়াবের সভাপতি ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের গভর্নিং বডি মেম্বার মো. রাফেউজ্জামান এ দাবি জানান।
টোয়াব আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন এলাকার ট্যুর অপারেটরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, 'দেখা যায় বাজেটে যা বরাদ্দ রাখা হয় তার ৮০ শতাংশই খরচ হয় এভিয়েশন খাতে। তাই আমরা আলাদাভাবে এ বরাদ্দ চেয়েছি। ভ্রমনের জন্য পরিচিত প্রতিটি গন্তব্যের উন্নয়নে এ বরাদ্দ চাই। যেমন কুয়াকাটায় একটি মেরিন ড্রাইভ, একটা রিসোর্ট, জেটি করা প্রয়োজন। এ খাতে বরাদ্দ থাকলে এ সমস্ত জায়গার অবকাঠামোর উন্নয়নে ব্যয় করা যাবে'।
টোয়াব সভাপতি বলেন, 'পর্যটনখাতে প্রস্তাবিত বাজেটে এবার ৪ হাজার ৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৩৪৪ কোটি টাকা বেশি। আমি মনে করি—এই বরাদ্দ বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের বিকাশের জন্য খুবই সামান্য'।
টোয়াবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, করোনার কারণে ২০২০ সালে পর্যটনখাতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৪০ লাখ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেকে হতাশ হয়ে অন্য ব্যবসায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মো. রাফেউজ্জামান বলেন, 'ট্যুর অপারেটরদের ৭৮৭ প্রতিষ্ঠান টোয়াবের সদস্য । গত বছর করোনায় শুধু টোয়াব সদস্যদের ক্ষতি হয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। আমরা সরকারের কাছে ট্যুর অপারেটরদের জন্য প্রণোদনার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক লাখ লোক বেকার হয়ে যাবে। পর্যটন শিল্প ক্ষতির মুখে পড়বে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজকে থেকেই দেশের সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি'।
মো. রাফেউজ্জামান বলেন, 'যেহেতু সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে পরিবহন, দোকানপাট ও অন্যান্য সবকিছু খুলে দিয়েছে , সেহেতু আমরা মনে করি স্বাস্থ্যবিধি ও এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর) মেনে চলার শর্তে বাংলাদেশের পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেয়া যুক্তিযুক্ত'।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে টোয়াবের পরিচালক (গণমাধ্যম ও প্রকাশনা) মোহাম্মদ সাহেদ উল্লাহ বলেন, 'করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের ফলে দেশের ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় এক হাজার ট্যুরিস্ট স্পট বন্ধ রয়েছে। যদি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত লকডাউন বা বিধিনিষেধ থাকে, তবে এই খাতে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে'।
সংবাদ সম্মেলনে ট্যুর অপারেটরদের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি মওকুফ করা, টোয়াবের সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা দেয়া এবং পর্যটনের জন্য আলাদা একটি মন্ত্রণালয়ের দাবিও জানানো হয়।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্টস ফোরাম, বাংলাদেশ (এটিজেএফবি) সভাপতি নাদিরা কিরণ, ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন আব কুয়াকাটা (টোয়াক) এর সভাপতি রুমান ইমতিয়া তুষার, ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব সুন্দরবন (টোয়াস) এর সভাপতি মইনুল ইসলাম জমাদ্দার, ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন আব কক্সবাজার (টুয়াক) এর সভাপতি তোফায়েল আহমেদ সহ বিভিন্ন ট্যুর অপারেটরের প্রতিনিধিরা।