মার্কিন সেনাদের গোপনে বাগরাম ঘাঁটি ছাড়ায় ক্ষুদ্ধ আফগান কর্তৃপক্ষ
আফগানিস্তানের বাগরামে ২০ বছর ধরে বিমানঘাঁটি পরিচালনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। সৈন্য প্রত্যাহার ঘোষণার কয়েকদিনের মাথায় শুক্রবার (২ জুলাই) বাগরামের নতুন আফগান কমান্ডারকে অবহিত না করেই রাতের আঁধারে গোপনে ঘাঁটি ছাড়ে মার্কিন সেনারা।
আফগান সামরিক কর্মকর্তাদের অভিযোগ, মার্কিন সেনারা চলে যাওয়ার দুই ঘন্টারও বেশি সময় পরে তারা বিষয়টি জানতে পারেন।
যাওয়ার পূর্বে মার্কিন সেনারা বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে যায় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
বাগরামের নতুন আফগান কমান্ডার মীর আসাদুল্লাহ কোহিস্তানি জানান, "আমেরিকানরা বাগরাম ছেড়ে চলে গেছে এমন গুঞ্জন আমাদের কানে এসেছিল। অবশেষে সকাল ৭টার সময় আমরা বুঝতে পারি যে, তাদের চলে যাওয়ার সংবাদটি সঠিক।"
তবে, এভাবে না জানিয়ে বিমানঘাঁটি ছেড়ে যাওয়ায় আফগান সেনারা ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগেই সেখানে লুটেরাদের একটি দল হামলা চালায়।
কাবুল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাগরাম ঘাঁটি।
এখানকার কারাগারের ৫০০০ বন্দি রয়েছে যাদের অধিকাংশই তালিবান। ঘাঁটিকে অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে যাওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেন আফগান কমান্ডার।
বাগরামের এই বিমানঘাঁটিতে একসময় মার্কিন সৈন্যদলের সংখ্যা ছিল প্রায় এক লাখ। মার্কিন সেনাদের এভাবে গোপনে চলে যাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আফগান সৈন্যরা।
দ্য গার্ডিয়ানের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আফগান সেনা নেয়ামাতুল্লাহ জানান, "এভাবে চলে গিয়ে একরাতেই তারা ২০ বছরের সকল শুভকামনা হারিয়ে ফেলেছে।"
শুক্রবার মার্কিন সেনারা চলে যাওয়ার ২০ মিনিটের মাথায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় বলে জানান আবদুল রউফ নামের একজন আফগান সেনা।
হুট করে সব অন্ধকার হয়ে যাওয়ার মার্কিনদের চলে যাওয়ার সংকেত পায় লুটেরাদের দল। উত্তরদিক থেকে তারা ব্যারিকেড ভেঙে মার্কিন সেনাদের ফেলে যাওয়া জিনিস নিতে ভবনগুলোতে প্রবেশ করে। ট্রাকে যা কিছু তোলা সম্ভব ছিল সবই তারা নিয়ে যায়।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা চলে যাওয়ার তিনদিন পরেও লুটেরাদের ফেলে যাওয়া খালি বোতল, ক্যান ইত্যাদি আবর্জনা সংগ্রহে ব্যস্ত ছিল আফগান সেনারা।
শুক্রবার এক ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তারা আফগানিস্তানের বৃহত্তম বিমানঘাঁটি সম্পূর্ণরূপে খালি করে এসেছে। আগস্টের শেষ নাগাদ সম্পূর্ণরূপে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হবে বলেও জানিয়েছে পেন্টাগন।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান