পুলিশকে জনবান্ধব হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
পুলিশকে জনবান্ধব হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে যে কোনো অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘পুলিশকে জনগণের পুলিশ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনের মাধ্যমে যে কোনো ধরনের অপরাধ নির্মূল করা খুব সহজ। আমি আশা করি আপনারা এটি মাথায় রেখে কাজ করবেন।’
রোববার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০২০’ এর উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুরু হওয়া পাঁচ দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, পুলিশ জনবান্ধব হবে, এটাই চায় সরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য বরাদ্দ অর্থকে সরকার কখনোই ব্যয় হিসেবে বিবেচনা করে না, বরং মানুষের কল্যাণ ও স্বার্থের জন্য বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করে।
‘এটি মাথায় রেখে, আমরা পুলিশকে আধুনিক প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জাম সরবরাহ করার পদক্ষেপ নিচ্ছি, যাতে তারা মানুষের জন্য আরো ভালোভাবে সেবা দিতে পারে,’ যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক গুণগত পরিবর্তন হয়েছে এবং তারা জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ হলো জনগণের সেবক এবং যখনই প্রয়োজন হবে তারা তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার দেশ থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতি নির্মূলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এসব সামাজিক সমস্যাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানও পরিচালনা করা হচ্ছে।
‘এসবের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছি। আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে চাই,’ উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে এখন বিনিয়োগ আসছে এবং এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। ‘আমাদের লক্ষ্য হলো দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখা এবং আমরা এটি মাথায় রেখেই কাজ করছি।’
পুলিশ বাহিনীর কল্যাণে তার সরকারের নেয়া নানা উন্নয়নমূলক কর্মসূচির কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের আজীবন রেশন ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং একটি খোলা জিপে চড়ে বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটের সালাম গ্রহণ করেন।
বছরজুড়ে ভালো কাজ, গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণ ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের ব্যাজ পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। ১৪ জন বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম- সাহসিকতা), ২০ জন রাষ্ট্রপতি পুলিশ মেডেল (পিপিএম-সাহসিকতা), ২৮ জন বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম-সেবা) ও ৫৬ জন রাষ্ট্রপতি পুলিশ মেডেল (পিপিএম-সেবা) পেয়েছেন।
এছাড়াও শেখ হাসিনা রাজারবাগ পুলিশ লাইনে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির দেয়া বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাভেদ পাটোয়ারী অনুষ্ঠানস্থলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।