টোকিওতে ফের জরুরি অবস্থা জারি, চলবে অলিম্পিকের সময়ও
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় টোকিওতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে জাপান; যা অলিম্পিক গেমসের সময়জুড়েও বজায় থাকবে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থা আগামী ২২ আগস্ট পর্যন্ত থাকবে; তবে তিনি কোভিড বিধিনিষেধ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
২৩ জুলাই টোকিও অলিম্পিকের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, টোকিওতে করোনাভাইরাস সংক্রমণও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অলিম্পিক গেমস স্থগিত কিংবা বাতিল করার পক্ষে রায় দিয়েছেন বহু জাপানি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'করোনাভাইরাস ভ্যারিয়েন্টগুলোর প্রভাব বিবেচনা করে এবং দেশের বাকি অংশে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আমরা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপসমূহ জোরদার করবো। তাই এই মুহূর্তে আমরা টোকিওতে জরুরি অবস্থা জারি করছি।'
অলিম্পিকের আয়োজক কমিটি, সরকার ও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট থমাস ব্যাচ এর মধ্যে একটি বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেয়া হয়।
আগামী ২৩ জুলাই থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে জাপানের রাজধানীতে অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ২৪ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্যারালিম্পিক গেমস এর সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।
জাপানের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি
গত এপ্রিলে জাপানে সংক্রমণের দ্বিতীয় তরঙ্গ শুরু হয়; কিন্তু সব মিলিয়ে সারাদেশে তাদের কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম এবং সর্বমোট মৃতের সংখ্যা ১৪,৯০০।
বুধবার দেশটিতে ২১৮০ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ৯২০ জন ছিল টোকিওর বাসিন্দা। গত ১৩ মে ১০১০ জন আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে এটিই ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
জাপানের টিকাদান কর্মসূচি চলছে ধীরগতিতে এবং দেশটির মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ পুরোপুর টিকা নিয়েছেন। সম্প্রতি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাবকে ঘিরে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে জাপানিরা।
টোকিও ও ওসাকা শহরেই সংক্রমণের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, জুলাইয়ের মধ্যেই ৬৫ বছরের বেশি বয়সী সবাইকে টিকার পূর্ণাঙ্গ ডোজ দিতে পারবেন তারা।
এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্যসহ ১৫৯টি দেশের বিদেশি নাগরিকদের জাপানে প্রবেশের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
জাপানিরা কি অলিম্পিক আয়োজনের বিরোধী
কোভিড-১৯ জটিলতা, বাজেট স্বল্পতার কারণে ইতিমধ্যেই অলিম্পিক গেমস এক বছরের জন্য পিছিয়ে গেলেও; এখনো প্রচুর জাপানি অলিম্পিক আয়োজনের বিরোধিতা করে যাচ্ছেন।
দেশটির প্রধান সংবাদপত্র 'আসাহি শিমবুন' জুন মাসে একটি ভোটের আয়োজন করে, যেখানে দেখা গেছে ৮০ শতাংশ জনগণ অলিম্পিক স্থগিত কিংবা বাতিল করার পক্ষে।
সংবাদপত্র সংস্থাটি নিজেরাও অলিম্পিক বাতিল করার দাবি জানিয়েছে।
অসংখ্য মানুষের অলিম্পিক-বিরোধিতার কারণে কোম্পানিগুলো তাদের অলিম্পিক সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন প্রচার করতে দ্বিধাবোধ করছে।
- সূত্র- বিবিসি