কক্সবাজারে এক বছরে ১৬টি বাচ্চা প্রসব করেছে এশিয়ান হাতি
গত এক বছরে প্রায় ১৬টি এশিয়ান বাচ্চা হাতি প্রসব হয়েছে কক্সবাজারের দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন বনাঞ্চলে। সর্বশেষ ২ আগস্ট মা হাতি একটি বাচ্চা হাতি প্রসব করে টেকনাফের হোয়াইক্যং বনে। হাতির আবাসস্থল দখল করে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের আগ্রাসনের মধ্যেও হাতিদের বাচ্চা প্রসবের খবরে পরিবেশবাদীদের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন বনাঞ্চলে গত এক বছরে এক বছর বয়সী প্রায় ১৬টি বাচ্চা দেখা গেছে। হিমছড়ি, ধোয়াপালং, পানেরছড়া, ইনানী, হোয়াইক্যং, শীলখালী রেঞ্জের বনাঞ্চলে এসব বাচ্চা প্রসব করে মা হাতি।
তিনি জানান, সর্বশেষ ২ আগস্ট কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের হোয়াইক্যং বিটের মংলা জাইন চাকমার ঘোনা এলাকার বনের অভ্যন্তরে একটি হাতি বাচ্চা প্রসব হয়েছে। মা এবং বাচ্চা হাতিটি সুস্থ আছে। মা ও হাতির চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে হোয়াইক্যং রেঞ্জ সিপিজি সদস্যদের নিয়ে পাহারার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
হুমায়ুন কবির জানান, ২০১৭ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী কক্সবাজারের এই দক্ষিণ বনে মোট এশিয়ান হাতি রয়েছে ৬৩টি। এসব হাতি থেকে প্রজনন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শেখ নাজমুল হুদা বলেন, "হাতির আবাসস্থলের এসব এলাকায় আগের পরিবেশ ফিরে এসেছে। এখনো হাতির নিরাপদ আবাসস্থল জোন হিসাবে রয়েছে এসব বনাঞ্চল। খাদ্য নিরাপত্তা, নিরাপদ এবং সহনীয় পরিবেশ রয়েছে বলে এখনো হাতিরা এসব এলাকায় নির্বিঘ্নে বিচরণ করছে এবং বাচ্চা প্রসব করছে"।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু বলেন, "কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৬৩টি এশিয়ান হাতি রয়েছে। অধিকাংশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে এসব হাতির আবাসস্থলে। ফলে এসব হাতির জীবন সংকটে পড়ে। তাদের চলাচলের করিডোর বন্ধ হয়ে যায়"।
তিনি বলেন, "২০১৭ সালে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে খাদ্য-আবাসস্থল সংকটসহ নানা বিপদে পড়ে এসব হাতি। এর মধ্যে হাতির বাচ্চা প্রসব করার খবর অত্যন্ত সুখকর। এই অবস্থায় হাতিদের যে আবাসস্থল রয়েছে তা নিরাপদ রাখতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তাসহ তাদের অন্যান্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে"।