সিলসের ইতিহাসের পর রোচ ঝলক, ক্যারিবীয়দের রোমাঞ্চকর জয়
৭১ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস অল্পতেই আটকে রেখেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তরুণ পেসার জেডেন সিলস। তাতে লক্ষ্যটা নাগালেই থাকে ক্যারিবীয়দের। এরপরও বারবার দিক হারিয়েছে স্বাগতিকরা, ম্যাচের রং পাল্টেছে ক্ষণে ক্ষণে। কিন্তু শেষটা রাঙিয়েছেন ক্যারিবীয় পেসার কেমার রোচ। না, বল হাতে নয়, ব্যাটসম্যান রোচ জয়ের বন্দরে নিয়ে গেছেন উইন্ডিজকে।
কিংসটনে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১ রানের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৬৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে হাবুডুবু খাওয়া দলকে ব্যাট হাতে এগিয়ে নিয়ে যান কেমার রোচ। ৩০ রানের হার মানা ইনিংস খেলে দলকে দারুণ এক জয় এনে দেন ক্যারিবীয় এই পেসার।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস থামে ২১৭ রানে। জবাবে অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের ৯৭ ও জেসন হোল্ডারের ৫৮ রানে প্রথম ইনিংসে ২৫৩ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে ৩৬ রানের লিড পায় ক্যারিবীয়রা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে ৫ উইকেট নেওয়া সিলসের বোলিং তোপে ২০৩ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। উইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬৮ রান।
দলের লক্ষ্য ছোট রাখার পথে বিশেষ অবদান রাখেন ম্যাচ সেরা সিলস। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নেন তিনি। এতে ইতিহাস গড়ে ফেলেন ১৯ বছর বয়সী সিলস।
উইন্ডিজের সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে টেস্টে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তিটা এতদিন ছিল অ্যালফ ভ্যালেন্টাইনের দখলে। ১৯৫০ সালে নিজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। সে সময় তার বয়স ছিল ২০ বছর ৪১ দিন। সিলস ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন ১৯ বছর ৩৩৬ দিনে।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। শাহিন শাহ আফ্রিদির বোলিং তোপে শুরুতেই এলোমেলো হয়ে পড়ে তাদের ইনিংস। মাত্র ১৬ রানের মধ্যেই ক্যারিবীয়দের ৩টি উইকেট তুলে নেন পাকিস্তানের বাঁহাতি এই পেসার।
শুরুর এই ধাক্কা সামাল দেন রস্টন চেস ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড। এই জুটিতে ৮৪ রানে পৌঁছে যায় উইন্ডিজ। চেস ২২ রান করে ফিরলে আবারও দিক হারায় ক্যারিবীয়রা। ডাবল সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইতিহাস গড়া কাইল মায়ার্স দ্রুত ফিরে যান।
কিছুক্ষণ পর ফিরে যান সর্বোচ্চ ৫৫ রানের ইনিংস খেলা ব্ল্যাকউড। ১৬ রান করা জেসন হোল্ডারকে ফেরান হাসান আলী। ১৩ রান করা জশুয়া ডি সিলভাকে নিজের চতুর্থ শিকারে পরিণত করেন শাহিন আফ্রিদি। এরপরের গল্পটা কেবলই রোচের। জোমেল ওয়ারিক্যান ফেরার পর জেসন সিলসকে সঙ্গে নিয়ে জয় তুলে নেওয়ার কাজটি সারেন রোচ। ডানহাতি এই পেসার ৫২ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন। শাহিন আফ্রিদি ৪টি, হাসান আলী ৩টি ও ফাহিম আশরাফ ২টি উইকেট নেন।